দুটি রুম পেয়েছি আমরা; মোট ৫ টি বেড আছে এ দুটোতে। ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করতে গেলাম; তিন বেলাতেই বাফেট সিস্টেম এখানে। সিদ্ধান্ত নিলাম, বিকেলে নিগম্বো সী-বীচে যাব; এ দিকে নিগম্বো বীচ ছাড়া আর তেমন কোন দর্শনীয় স্থান নেই।
নিগম্বো সী-বীচে গেলাম টুকটুক-এ করে; এগুলো হলো আমাদের দেশের সিনজি তবে তেলে চলে। শ্রীলংকাতে রাস্তায় ধূলা নেই তবে প্রচুর কালো ধোঁয়া আছে; আর আমাদের দেশে ধোঁয়া এখন ততটা নেই তবে প্রচুর ধূলা আছে।
ভালো লেগেছে ওদের ট্রাফিক সিগন্যাল মানতে দেখে; মালদ্বীপ এবং শ্রীলংকা দুই দেশেই অত্যন্ত কড়াকড়িভাবে ট্রাফিক সিগন্যাল মানা হয়ে থাকে। টুকটুক সাধারণত মিটারে চলে, প্রতি কিলোমিটার যেতে লাগে ১০০ রুপি।
শ্রীলংকাতে যদি আপনি প্রাইভেট গাড়ি চড়তে চান, তাহলে অবশ্যই ‘পিক-মি’ অথবা ‘উবার’ এই এপগুলি থাকতে হবে; নইলে পাবার কোন সম্ভাবনা নেই। এখানে একটা এড আমি দেখেছিলাম, সিম কিনতে ৮০০ রুপি লাগে, তবে আমি নিজে কিনিনি।
নিগম্বো সী-বীচটি একদম আমাদের কক্সবাজারের লাবনী বীচের মত; ইয়া বড় বড় ঢেউ, সন্ধ্যার সময়ও মানুষজন গোসল করছে, বাচ্চারা আনন্দ করছে। একটা পার্থক্য আছে কক্সবাজারের সাথে, এখানে একটা জায়গায় লম্বা করে পাথরের বাঁধ আছে; সেখানে সাগরের পানি আছড়ে পড়ে জলোচ্ছ্বাসের মত ছিটকে উঠছে। এই বাঁধের উপর বসে অসংখ্য লোক গল্প করছে।
অনেকখানি হাঁটলাম, আইসক্রীম ও চিংডির বড়া খেলাম। ভাসমান দোকানপাট সব মিলিয়ে ৮/১০ টি, সবই খাবারের দোকান; আর ফিক্সড দোকান তিনটি, একটি আইসক্রীমের, একটি সস্তা দরের খেলনার আর একটি কাপড়-চোপড়ের।
টুকটুক দিয়েই ফিরতে হলো, অনেক হাত নেড়েও প্রাইভেট গাড়ি বা ট্যাক্সি পেলাম না; মোট ১২ কিমি রাস্তা, সময় লাগে আধাঘন্টা। এখন আর কালো ধোঁয়া সহ্য হয় না, তবু করতে হলো।
পরদিন লাঞ্চ করে হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ হাত নাড়িয়ে একটা প্রাইভেট গাড়ি থামানো গেল; সে ৫,০০০ রুপিতে কলম্বোর লোটাস টাওয়ারের সামনে নিতে রাজি হলো।
উঠে গেলাম; ওঠার পর জিগ্যেস করল, হাইওয়ে দিয়ে যেতে চাও কিনা? বললাম, চাই। এও বুঝলাম, এখানে একটা চার্জ দিতে হবে। ৪৮০ রুপির মত একটা চার্জ নিলো এবং মাত্র ২৫ মিনিটে কলম্বোর বিখ্যাত লোটাস টাওয়ারে পৌঁছে গেলাম।
(ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)