মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি ১৪ (শেষ পর্ব)

মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি ১৪ (শেষ পর্ব)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি ১৪ (শেষ পর্ব)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি ১৪ (শেষ পর্ব)

‘গল ফেস গ্রীন’ এর এক পাশে সমুদ্র, অপর পাশে সুদীর্ঘ এক সবুজ মাঠ; এ দুয়ের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে একটি রোড, এখানে কোন গাড়ি চলে না। এটি কেবল দর্শণার্থীদের হেঁটে বেড়াবার জন্য। বিশাল বিশাল ঢেউ এসে রাস্তার পাশে বাঁধানো পাথরের গায়ে আছড়ে পড়ছে।

দ্রুত এসেছিলাম সূর্যাস্ত দেখবার জন্য, কিন্তু কালো মেঘে সূর্য ঢাকা পড়েছে; অস্ত যাবার আগে একবার দেখা দিবে কিনা নিশ্চিত নই। স্ত্রী আর বড় ছেলেকে এক জায়গায় বসিয়ে ছোট ছেলেকে নিয়ে মাঠ ধরে হাঁটা দিলাম; যত বড় ভেবেছিলাম, এটি তার দ্বিগুন!

নানান রকমের খেলার সরঞ্জাম নিয়ে দোকানীরা বসেছে; এর মধ্যে বেশী নজর কেড়েছে ‘বাবল’, বাচ্চারা এর প্রধান কাস্টমার। ইয়া বড় বড় বাবল মাঠময় উড়ে বেড়াচ্ছে। কেউ ক্রিকেট খেলছে, কেউ দৌড়াদৌড়ি করছে।

এক জায়গায় গিয়ে পাওয়া গেল বাচ্চাদের স্পোর্টস জোন; এখানে সাদকে ঢুকিয়ে দিলাম টিকেট কেটে; সে অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলতে লাগলো।

একটা বিশেষ জায়গা আছে যেখানে সমুদ্রের উপরে একটি জেটির মত করে দিয়েছে, মূলতঃ এটি সানসেট ভিউ পয়েন্ট; দর্শণার্থীরা এখানে দাঁড়িয়ে সমুদ্র উপভোগ করে ও সূর্যাস্ত দেখে। একেবারে শেষ সময়ে বড় ছেলেকে নিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম, সূর্য ধীরে ধীরে বিদায় নিয়ে চলে গেল।

এই মাঠের পাশে এক নতুন শ্রীলংকার উদয় হচ্ছে; এখানে একটি টুইন টাওয়ারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে, আমি নিশ্চিত, একদিন মানুষ এটি দেখতে শ্রীলংকা আসবে, যেমন মালয়েশিয়া যায় টুইন টাওয়ার দেখতে।

গল ফেস গ্রীন এর যে সৌন্দর্য, সেটি বহুগুনে বেড়ে যাবে এই বিল্ডিংগুলির কাজ শেষ হলে। এখানে ঘন্টা দুয়েক কাটিয়ে আবার গেলাম রাতের লোটাস টাওয়ার দেখতে।

এটি এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে রইবে! অদ্ভুত সুন্দর লাগছে এটি রাতের বেলা; এর লোটাস অংশটি সাতটি রঙে বারবার আবর্তিতি হচ্ছে, অপলক চেয়ে থাকা যায়।

এটিকে আজ আরো মহিমান্বিত করেছে আকাশের চাঁদ! লোটাস টাওয়ারের উপরেই যেন চাঁদ আজ বাসা বেঁধেছে। সাধ মিটিয়ে লোটাস টাওয়ার দেখে বিদায়ের প্রস্ততি নিলাম; কোন প্রাইভেট কার না পেয়ে অগত্যা টুকটুক দিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। সময় লাগলো এক ঘন্টা; মিটারে বিল এলো ৩,৭০০ রুপি।

শ্রীলংকাতে আজ শেষ রাত; ভোরের গাড়িতে করে এয়ারপোর্টে গিয়ে ৭;২৫ এর ফ্লাইট ধরে ঢাকা। শরীর ক্লান্তিতে ভেঙ্গে আসছিল; ৬ দিনের ট্যুরের ধকল তো সহজ কথা নয়! গুড উড হোটেলের শেষ বেলার খাবার খেয়ে লাগেজ গুছিয়ে ঘুমাতে গেলাম; পিছনে পড়ে রইল অজস্র স্মৃতি, যেগুলো শত ব্যস্ততাতেও হয়ত ভুলে যাওয়া সম্ভব হবে না।

Scroll to Top