মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৯)

মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৯)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৯)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৯)

সালমান মসজিদের পাশের যে পার্ক সেখান থেকে উঠতে মন চাচ্ছিল না; কিন্তু হাতে সময় কম বিধায় উঠতে হলো। ব্যাকপ্যাক নিয়ে ট্রলি ঠেলে পরিবারের চারজন আবার হাঁটা দিলাম পিজিয়ন পার্ক তথা কবুতর চত্বরের দিকে; শুনেছি এর পাশেই আছে মালে’র বিখ্যাত জাতীয় মসজিদ।

মালে’কে মটরসাইকেলের শহর বললে অত্যুক্তি হয় না; এখানে আমার ধারণা, মানুষের চাইতে মটরসাইকেল বেশী! তার সাথে পাল্লা দিয়ে আছে প্রাইভেট কার আর ট্যাক্সি; পুরোদস্তর রাজধানী।

যে ফুটপাত ধরে হাঁটছি, তার ডানপাশেই সাগর, সেখানে নানান ধরনের বোট নোঙ্গর করা আছে; দেখলাম, মালদ্বীপের কোস্ট গার্ড এর বোটও আছে এর সাথে।

কবুতর চত্বরে গিয়ে অজস্র কবুতরের দেখা পাওয়া গেল; এক লোক খাবার দিয়েছে এদেরকে, ফলে এক ঝাঁক পায়রাকে একসাথে উড়তে দেখার সুযোগ পাওয়া গেল, বড় সুন্দর সে দৃশ্য!

এই চত্বরের উল্টোদিকে রয়েছে এ পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে নয়নাভিরাম জেটি, এটি প্রেসিডেন্সিয়াল জেটি হিসেবেও পরিচিত; প্রেসিডেন্টের বাসভবন এখান থেকে খুব দূরে নয়।

এর ডিজাইনটি করা হয়েছে কিছুটা সিডনি’র অপেরা হাউজের আদলে; আধুনিকতা ও রুচি’র পূর্ণ পরিচয় বহন করে স্থির দাঁড়িয়ে আছে আর আগত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে।

কবুতর চত্বর পেরিয়ে রাস্তা, সেই রাস্তার ওপাশে গিয়ে মালে’র জাতীয় মসজিদ দেখে বিস্ময়ে মুখ হা হয়ে গেল! ছোট্ট একটা দ্বীপে এমন নান্দনিক সৌন্দর্যের মসজিদ আমি সত্যিই আশা করিনি।

এর বিশালতাকে অনুভব করার চেষ্টা করলাম; খুব ভালো করে খেয়াল না করলে, এর উপরে যে একটি সোনালী রঙের অতি সুন্দর ও বৃহদাকার গোলাকার মিনার আছে তা চোখেই পড়বে না।

বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে ফেরত এলাম কবুতর চত্বরের ওখানে, যেখানে আমার স্ত্রী বসা ছিলেন; ওনার পায়ের ব্যাথা বেড়েছে বিধায় উনি এখান থেকে আর নড়েন নি।

মালে’র অরিজিনাল বীচ আর প্রেসেডেন্টের বাড়ি দেখবার সাধ ছিল, কিন্তু আর অপেক্ষা করা গেল না; তীব্র গরম, সাথে বাতাসে আর্দ্রতা অতি বেশী। ফলে একটি ট্যাক্সি ৯০ রুফিয়াতে ভাড়া করে হুলহুমালে দ্বীপের দিকে অগ্রসর হলাম।

বলে রাখি, বাংলাদেশ থেকে যারা যান, তারা অনেকেই এই রাজধানী শহরটি ঘুরে দেখেন না, জানেনও না এখানে কি দেখার আছে; প্যাকেজওয়ালারা ভুলেও এর নাম উচ্চারণ করে না, অথচ এটি খুব সুন্দরভাবেই একটি হাফ-ডে টুরের জন্য যথার্থ হতে পারে।

মালে থেকে ব্রীজ ধরে আপনি যখন হুলহুমালে যাবেন, পথিমধ্যেই একটি রাস্তা পাবেন যেটি বামে গিয়ে এয়ারপোর্ট চলে গেছে; অর্থাৎ, এয়ারপোর্ট দ্বীপ থেকে একটি রাস্তা বেরিয়ে এসে ব্রীজের সাথে মিশে দুই দিকে চলে গেছে, ডানে মালে দ্বীপে এবং বামে হুলহুমালে দ্বীপে। এই তিনটি দ্বীপের মধ্যে ১০-১৫ রুফিয়া দিয়ে সরকারি ফেরিতে চড়া যায় এবং সাশ্রয়ীও বটে!

Scroll to Top