মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৮)

মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৮)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৮)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৮)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৮)

ছেলেদের নিয়ে ওযু করে মসজিদে ঢুকলাম; দেখলাম বেশীরভাগ মুসল্লী বাংলাদেশী, তাই হবার কথা! কিন্তু ঘটনা ঘটলো তৃতীয় রাকাতে গিয়ে; সূরা শেষ করে যখন ইমাম সাহেব আল্লাহু আকবার বললেন, আমরা রুকুতে চলে গেলাম, কিন্তু আর কেউ গেল না!

আমরা আবার দাঁড়িয়ে গেলাম, দেখি সবাই দাঁড়িয়ে মোনাজাত ধরেছে, যেমন ধরে থাকে সৌদি আরবের বিতরের নামাজে! অগত্যা আমরাও মোনাজাত ধরলাম, আশায় আছি এর পরে রুকুতে যাবে; কিন্তু না, রুকু না করে চলে গেল সবাই সিজদায়, আমরাও তাই! জীবনে এই প্রথম রুকু ছাড়া নামাজ পড়লাম; এটা যে কোন তরিকার, কিছুতেই ঠাহর করতে পারলাম না!

যাই হোক, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে আবার পূর্ব বীচে বসলাম; আজ মাফুশি দ্বীপে শেষ রাত। এখানে পুরো দ্বীপ জুড়ে হ্যামক বসানো আছে; যে কেউ বসতে পারে। আমরা হ্যামকে বসে রাতের সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছি। সামনেই একটা টেবিল সেট করা হচ্ছে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের জন্য; কোন কাপলের হয়ত অর্ডার আছে।

পরদিন ভোরেই ঘুম ভাঙ্গল, ৭ঃ৩০ এর ফেরি ধরে যেতে হবে মালেতে, সেখান থেকে হুলহুমালেতে; আজ রাত থাকা হবে হুলহুমালেতে। হোটেলের কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট দিবে ৭ঃ০০ টায়, নাস্তা খেয়েই দৌড়াতে হবে ঘাটে।

নাস্তা শেষ হতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো; হোটেল থেকে আমাদের ছাতা দেয়া হলো; যে লোকটা গাড়িতে করে ব্যাগ নিয়ে যাবে, সে আসার সময় ছাতা নিয়ে আসবে। বলা বাহুল্য, এরা সবাই বাংলাদেশী; এখানে হোটেল বয়, ট্রান্সপোর্টার, রেস্টুরেন্ট বয় এন্ড ম্যানেজার সবাই বাংলাদেশী।

সরকারি ফেরি ঠিক ৭ঃ৩০ এ ছেড়ে দিল, সমস্ত জাতির লোকরাই আছে, আছে প্রচুর সাদা চামড়ার লোকও; তিন হাজার বাংলা টাকার জার্নি ১৬০ টাকায় করা যাচ্ছে, লোক থাকবে না কেন? পুরোনো দিনের মত, একজন মালিদিভিয়ান পিচ্চি সাইজের টিকেট দিচ্ছেন আর ২২ রুফিয়া করে নিচ্ছেন।

সাগর উত্তাল রয়েছে আজ, বেশ বড়সড় কিছু ঢেউ পেরিয়ে এক ঘন্টা ৪৫ মিনিট পরে মালে’র বন্দরে ভিড়লাম। এখানে সরকারি ফেরির জেটি, অফিস, টিকেট কাউন্টার এত সুন্দর যে অবাক হতে হয়। একটা দেশের রাজধানীতে এসেছি আর সেটি না দেখে চলে যাব, তা কি করে হয়! বাকেট লিস্ট করাই ছিল, দেখতে নেমে পড়লাম।

মালে শহরের যে স্থাপনাটি সহজেই সবার চোখে পড়ে সেটি একটি মসজিদ; আমার ধারণা ছিল এটিই মালে’র বিখ্যাত জাতীয় মসজিদ। কিন্তু না, ধীরে ধীরে হেঁটে এর কাছাকাছি গিয়ে জানলাম, এর নাম সালমান মসজিদ।

এর নির্মাণশৈলী এত চমৎকার যে মুগ্ধ হতে হয়! এর পাশেই রয়েছে একটি ছোট পার্ক ও বীচ যেখান থেকে এয়ারপোর্ট দ্বীপের সাথে মালে ও হুলহুমালে দ্বীপের সংযোগকারী ব্রীজটি সহজেই চোখে পড়ে। এই জায়গাটির সৌন্দর্য অবর্ণনীয়; অনেককেই দেখলাম সাঁতার কাটছে আর পার্কে দেখলাম কেউ কেউ রমনা পার্কের মত আরাম করে বসে আছে!

Scroll to Top