মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৫)

মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৫)
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা | এক টিকেটে দুই ছবি (পর্ব ০৫)

আমাদের সেন্টমার্টিনে গেলে আমি একবার পুরো দ্বীপ ঘুরে আসি; এটা আমার শখ, খুব ভালো লাগে। মাফুশি যেহেতু সেন্টমার্টিন সাইজের, তাই এটি ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম; সবাই মিলে হাঁটা দিলাম।

আমাদের হোটেল থেকে মূল যে রাস্তা, সেটা ধরে কিছুদূর গেলে দুটি হোটেল আছে, নাম KAANI আর ARENA; এগুলি মাফুশি দ্বীপের সেরা হোটেল।

এখানেই প্রায় সব ইউরোপিয়ান-আমেরিকানরা থাকেন আর এ দুটি হোটেলের সামনের বীচটাই বিকিনি বীচ। ফলে, কেউ কনজার্ভেটিভ ফ্যামিলি নিয়ে এলে এই দুই হোটেলে না ওঠাই ভালো।

এই দুই হোটেলের মাঝখান দিয়ে হেঁটে সুন্দর মূল রাস্তা ধরে, মাফুশি জেটির পাশ দিয়ে একেবারে পশ্চিম প্রান্তে চলে গেলাম। এই দ্বীপে তিনটি মসজিদ আছে এবং এখানে আউয়াল ওয়াক্তে আজান ও নামাজ হয়; সৌদি আরবের মত।

আমাদের সেন্টমার্টিন যেমন বাধাহীনভাবে পুরোটা বীচ ধরে হেঁটে আসা যায়, এখানে তেমন নয়; অনেক জায়গায় কনস্ট্রাকশনের কাজ হচ্ছে, পুরোনো বোট-ইট-কাঠ ফেলে রাখা হয়েছে, ফলে পুরোটা বীচ ধরে ঘুরে আসা যায় না, বেশীরভাগ যায়।

সানরাইজ বীচ হোটেল থেকে হাঁটা শুরু করেছিলাম, এখানেই শেষ করলাম; এই প্রান্তে সূর্যাস্ত নেই কিন্তু সূর্যের লালিমা পুব আকাশে আছড়ে পড়ে এ প্রান্তে এক অদ্ভুত দ্যোতনার সৃষ্টি করেছে। আমরা সেই দৃশ্য উপভোগ করছি আর এ পাশে বাচ্চারা শিশু পার্কে খেলায় মেতে উঠেছে; ছোট ছেলে সা’দ গিয়ে ওদের সাথে যোগ দিয়েছে।

এখানে খাবারের দাম অত্যন্ত বেশী, ইন ফ্যাক্ট সবকিছুরই দাম বেশী; এক লিটার পানি ৮-১০ রুফিয়া তথা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়। আমরা শেষ বিকেলে কিছু স্ন্যাকস ও ডাব খেলাম; পেট ভরেই খেলাম।

সূর্য একেবারে ডুবে যাবার পরে হোটেলে ফিরে আগামীকালের জন্য ডলফিন শো ও স্নরকেলিং এর প্যাকেজ বুক করলাম এই হোটেলেই। ৩০ ডলার করে পার পারসন; আমাদের মোট খরচ এলো ১০৫ ডলার, পিচ্চির জন্য ধরেছে ১৫ ডলার।

আজ রাতে খাবো আসলামের হোটেলে, সেই সিদ্ধান্ত নেয়াই ছিল; আসলামের হোটেলে গিয়ে দেখি, এখানে সিট পাওয়া কঠিন। সম্ভবতঃ এটাই সবচেয়ে বেশী চলে। কোনভাবে একটু জায়গা ম্যানেজ করে চারজন খেয়ে উঠলাম, এখানে রেট জহিরের হোটেলের চেয়ে কিছুটা বেশী; ৭০-৮০ রুফিয়ার মত লাগে প্রতিজন।

সারাদিনের ক্লান্তির পর ঘুমাবার পালা; সানরাইজ বীচ হোটেলের আয়োজন চমৎকার; বীচ ভিউ রুম হলে তো কথাই নেই। আগামীকাল স্নরকেলিং করব আর লাইভ ডলফিন দেখব সাগরের বুকে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে ঘুমের অতল তলে তলিয়ে গেলাম।

Scroll to Top