‘পাবলো’ নামের এক মালদিভিয়ান গাইডের পিছন পিছন হাঁটা দিলাম পরদিন সকালে নাস্তা করে; বলে রাখি, মালদ্বীপের অরিজিনাল অধিবাসীরা সাধারণত দেখতে কালো হয়, এদের স্কিন আর শ্রীলংকান ও দক্ষিণ ভারতের লোকদের স্কিন সেইম।
পাবলো প্রথমেই একটা দোকানে নিয়ে গেল, স্নরকেলিং এর আইটেমগুলো দিয়ে দিল এবং এরপরই স্পিডবোট ছেড়ে দিল গভীর সমুদ্রের দিকে। ২০ মিনিট পর পোঁছে গেলাম ডলফিনের সাম্রাজ্যে; সবসময় এরা দেখা দেয় না তবে আজ দিল!
প্রাণ ভরে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিনের সাঁতার দেখলাম।
এরপর চলে গেলাম স্নরকেলিং এর জায়গায়; জীবনে প্রথম মাল্টিডাইমেনশনাল গ্লাস দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে তাকিয়ে বিস্ময়াভিভূত হয়ে গেলাম!
সারাজীবন যেসব দৃশ্য টিভিতে দেখেছি, সেসব আজ আমার চোখের সামনে; নানান রঙের মাছ আমার চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার ছবি তোলার সুবিধার জন্য, পাবলো বোতল থেকে মাছের খাবার দিচ্ছে, ফলে অনেক মাছ আমাদের কাছে ভিড় জমাচ্ছে।
প্রথম প্রথম আমার একটু অসুবিধা হচ্ছিল; আমার মুখ হয়ে স্নরকেলিং যন্ত্রে পানি ঢুকে যাচ্ছিল, ফলে নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়েছি।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখি, এসব জায়গায় আপনি দেখবেন, কোথাও হালকা নীল পানি আর কোথাও গাঢ় নীল পানি; এর কারণ হলো, হালকা নীল পানির গভীরতা কম এবং এর নীচে থাকে বালি বা কোরাল। আর গাঢ় নীল পানির জায়গা হলো গভীর, যার গভীরতার কোন হিসেব নেই।
এখন ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা হলো, এরা বোট থামায় হালকা নীল পানি আর গাঢ় নীল পানির সংযোগস্থলে যাতে তারা নোঙ্গর ফেলতে পারে কোরালের সাথে আর আমরা দুটি দৃশ্যই দেখতে পারি! হালকা নীল পানি তথা কোরাল থেকে দৃষ্টি গাঢ় নীল পানির দিকে ফেরালে ভয় লাগে বৈকি!
আজ এসেছি আমার পরিবারের চারজন আর একটি সার্বিয়ান কাপল; এদের লজ্জা শরমের বালাই নেই, প্যান্টি পরে এই মেয়ে আমাদের সামনে দিয়ে হাঁটছে, আমরা সবাই না দেখার ভান করছি!
ওরা মাছ দেখা শেষ করে যখন টার্টল দেখতে গেছে, আমি ততক্ষণে ক্লান্ত হয়ে গেছি এবং এটি মিস করেছি। তবে আমার অতৃপ্তি নেই; আমি যা দেখেছি, তার বিস্ময়ের ভার বইবার শক্তিই বা আমার কই?!