![লাংলোক-লিক্ষ্যং - ১ 1 লাংলোক-লিক্ষ্যং - ১](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/09/লাংলোক-লিক্ষ্যং.jpg)
এখন আর আগের মত ট্যুর থেকে এসে এর বর্ণনা লিখতে ভালো লাগে না, সবাই যে সেগুলো পছন্দ করে তাও না, তবে এসব বিষয়ে আমি স্বেচ্ছাচারী, যেহেতু এটা আমার পছন্দের বিষয়!
এবার চন্দ্রবিন্দু ট্রাভেল গ্রুপের সাথে আমরা মোট ১৪ জন গিয়েছিলাম লাংলোক ও লিক্ষ্যং ট্যুরে; প্রথম দিন তো পুরো মেঘের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এত ঘন মেঘের মধ্য দিয়ে এর আগে কোনদিন চলিনি; দশ হাত দূরের জিনিসও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। এভাবেই একসময় চান্দের গাড়িতে করে থানচি পৌঁছাই এবং সাঙ্গু নদীতে গিয়ে নৌকায় উঠি।
তিন্দুর রাজাপাথর পেরিয়ে এক জায়গায় নৌকা ভিড়িয়ে মাটিতে বসেই প্যাকেটে আনা লাঞ্চ সেরে নিলাম। এরপর রওনা দিলাম বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ঝর্ণা লাংলোকের উদ্দেশ্যে। প্রায় দেড় ঘন্টা ট্রেকিং করে পৌঁছে গেলাম এবং লাংলোক বা লিলুক ঝর্ণা দেখে বিমোহিত হলাম।
বিকেলটা রেমাক্রি ফলসেই গোসল করে কাটিয়ে দিলাম; ঢলের পানি ছিল বলে এবার স্বচ্ছ পানি পাইনি, পানি কিছুটা ঘোলা ছিল, তাতে কি, রেমাক্রিতে গোসলের আনন্দ তাতে কমে না।
রেমাক্রিতে এত কটেজ আছে আমি কল্পনাও করিনি। রেমাক্রি ফলসের ঠিক উল্টোদিকে যে কটেজটি আছে তার নাম ‘শিলগিরি’ রিসোর্ট। আপনারা এখানে এলে এই কটেজে থাকার চেষ্টা করবেন, এতে করে কটেজ থেকেই ফলস দেখতে পাবেন এবং এর গর্জন শুনতে পাবেন।
অবাক হয়েছি, রেমাক্রিতে অনেক ঘরের চালে আমি এবার ‘আকাশ’ ডিশ দেখেছি; এরা এখন নিয়মিত ডিশ চ্যানেল দেখে। আমাদের নৌকার মাঝি বলল, সে নেইমারকে পছন্দ করে। আরেক মাঝিকে জিগ্যেস করে জানা গেল, মেসি এখন পিএসজিতে খেলে। ডিশ আছে বলেই তাদের কাছে এখন এত খবর।
পরদিন গাইড সুমন দা’কে সাথে নিয়ে চলে গেলাম লিক্ষ্যং-১ এ; আড়াই ঘন্টা সময় লাগল টোটাল যেতে। এই ট্রেইলের শুরুটা কঠিন, শেষটা ঝিরি পথে যেতে ভালোই লাগে। এখানেই সবচেয়ে বেশী আনন্দ করেছি। এই ঝর্ণার খুমের পানি অনেক পরিষ্কার বলে এখানে সাঁতার কেটেও অনেক আনন্দ। এরপর আধাঘন্টা ট্রেকিং করে গিয়েছি লিক্ষ্যং-২ তে এবং ফেরার পথে কুমারী ঝর্ণা দেখে এসেছি।
গাইড সুমন দা’র হাতে ট্যাটু; ওনাকে জিগ্যেস করলাম এটা কি? উনি বললেন ত্যাতু! বেশ অগ্রসর হয়ে গেছে এরা। রেমাক্রিতে একটি বাজার আছে, ট্যুরিস্টদের প্রয়োজনীয় সব পণ্যই এখানে পাওয়া যায়। এবার গোসলের কাজ সাঙ্গু নদীতেই সারতে হয়েছে, সেটাও এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
এবার চলিত পথে অনেকগুলো জুমঘর পেয়েছি, পেয়েছি নানান ধরনের পাহাড়ি রসালো ফল আর কলা। প্রচুর পরিমাণে ফল খেয়েছি পাহাড় ওঠানামার পথে। ট্যুরমেটরা সবাই ছিলেন অত্যন্ত চমৎকার মনের মানুষ। এই বছরের মত ঝর্ণা অভিযান আশাকরি সমাপ্ত হলো। বেঁচে থাকলে আবার ফিরব ঝর্ণার বর্ণনা নিয়ে আগামী বছর ইন শা আল্লাহ।
.লাংলোক ট্যুর নিয়ে এটাই শেষ পোস্ট; তাই বেশ কিছু ছবি দিলাম। যাদের ভালো লাগবে, দেখতে পারেন। ধন্যবাদ।