![শালবন বিহার - ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া – কুমিল্লা দর্শন ৪ 1 শালবন বিহার](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/09/কুমিল্লা-দর্শন.jpg)
শালবন বিহার – Shalbon Bihar
কুমিল্লার ময়নামতি শালবন বিহার এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে পুরাতন বিহার; এটি এত বহুল পরিচিত যে, আলাদাভাবে এর পরিচয় দেবার প্রয়োজন পড়ে না। খৃষ্টীয় ৭ম শতকের শেষ দিকে বা ৮ম শতকের শুরুর দিকে এর প্রতিষ্ঠা শুরু হয়।
মূলত: কুমিল্লায় যতগুলো বিহারের সন্ধান পাওয়া গেছে তার সবগুলোই সমসাময়িককালে স্থাপিত হয়।
![শালবন বিহার - ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া – কুমিল্লা দর্শন ৪ 2 শালবন বিহার 5](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/11/78424273_1191588854563889_2873553869458112512_n.jpg)
কুমিল্লার ময়নামতি
ময়নামতি বাংলাদেশের কুমিল্লায় অবস্থিত একটি । এযাবৎ আবিষ্কৃত লালমাই অঞ্চলের প্রাচীনতম সভ্যতার নিদর্শন হলো ময়নামতি প্রত্নস্থল। বর্তমানে ময়নামতি অঞ্চলে যে ধ্বংশস্তুপ দেখা যায় তা প্রকৃতপক্ষে একটি প্রাচীন নগরী ও বৌদ্ধ বিহারের অবশিষ্টাংশ ।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে ইহা জয়কর্মান্তবসাক নামক একটি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ ।
![শালবন বিহার - ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া – কুমিল্লা দর্শন ৪ 3 শালবন বিহার](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/11/শালবন-বিহার-5.jpg)
শালবন বিহার কোথায় অবস্থিত?
কুমিল্লার ময়নামতিতে খননকৃত সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে শালবন বিহার অন্যতম প্রধান। কোটবাড়িতে বার্ডের কাছে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এ বিহারটির অবস্থান।
বিহারটির আশপাশে এক সময় শাল-গজারির ঘন বন ছিল বলে এ বিহারটির নামকরণ হয়েছিল শালবন বিহার। এর সন্নিহিত গ্রামটির নাম শালবনপুর। এখনো ছোট একটি বন আছে সেখানে।
কিভাবে এবং কবে গেলাম?
প্রায় এক যুগেরও বেশী সময় পরে গত ৫ তারিখে গিয়েছিলাম শালবন বিহারে। ফিকে হয়ে আসা পুরোনো; স্মৃতি আবার জেগে উঠেছিল সেদিন, আমাদের বাচ্চাদের খুব ভালো লেগেছে পোড়ামাটির এসব পুরোনো স্থাপনা।
যারা এখনো আসেননি এখানে, তারা এটি দেখার পাশাপাশি অবশ্যই ময়নামতি যাদুঘর দেখে যাবেন। উভয় জায়গাতেই প্রবেশ টিকেট ২০ টাকা করে। এখানে গাড়ি পার্কিং-এর জন্য সুবিশাল জায়গা আছে; ৬০ টাকা করে পার্কিং চার্জ।
জাদুঘরে যা যা দেখলাম…
এখন থেকে ১২’শ-১৩’শ বছর আগে মানুষ মাটি দিয়ে কি সব জিনিস বানাত, যা ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদের নীচে পাওয়া গেছে তা দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে কুমিল্লার ময়নামতি জাদুঘর; শালবন বিহারের পাশেই এর অবস্থান।
জাদুঘরে ঢুকেই হাতের বাম থেকে দেখা শুরুর নির্দেশনা আছে। এ সাইডে বিপুলসংখ্যক বুদ্ধের মূর্তি আছে, কারন, এই বিহারগুলি আসলে বৌদ্ধ বিহার ছিল।
গোটা এশিয়া জুড়েই বুদ্ধের মূর্তি বোঝাই; এশিয়াতে ট্যুর করতে গেলে বুদ্ধের মূর্তি এড়ানোর কোন উপায় নাই।
যাই হোক, মূর্তিগুলি এড়িয়ে সেখানে দেখার মত আরও অনেক কিছু আছে, আছে সে সময় ব্যবহৃত গৃহস্থালি জিনিসপত্র, অলংকার ও অন্যান্য জিনিসপত্র; এগুলি সবই ৮ম শতকের বা সমসাময়িক কালের সৃষ্টি।
এখানে দেখতে পাবেন তালপাতার উপর বার্মিজ লেখা, দেখতে পাবেন অতি প্রাচীন বাংলা হাতের লেখা; বাংলা ভাষা যে কত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ সেটা এখান থেকেই বোঝা যায়। এমন আরও অনেক কিছুই আছে যা আপনাকে কল্পনায় অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
রেস্টহাউজ
জাদুঘরের পিছনের গেট দিয়ে বেরোলে একটি রেস্টহাউজের দেখা মেলে, এখানে থাকার সিস্টেম জানা হয়নি। এর পাশেই একটি বাগান আছে, বেশ কিছু ফুলও ফুটে থাকতে দেখলাম।
মানুষজন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছে। শালবন বিহার এলে এই জাদুঘরটি একবার দেখে যেতে ভুলবেন না। হ্যাপি ট্রাভেলিং।
(বি.দ্র. এসব পুরাকীর্তির ছবি তোলা নিষেধ হলেও, এই ছবিগুলি প্রায় সবই গুগলে পাওয়া যায়।)