![ড্রিম হলিডে পার্ক - এক স্বপ্নীল জগত! - Dream Holiday Park! 1 ড্রিম হলিডে পার্ক - এক স্বপ্নীল জগত! - Dream Holiday Park!](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/08/dream-holiday-park-1.png)
গিয়েছি | খরচ | থেকেছি | অবশ্যই নিবেন |
---|---|---|---|
জন | /- | দিন |
নরসিংদির ড্রিম হলিডে পার্ক সম্বন্ধে যারা ভালো বলেছেন তারা খুব প্রশংসা করেছেন, আর যারা খারাপ বলেছেন, তারা একেবারে বেশী মাত্রায় নিন্দা করেছেন। আমি গতকাল ফ্যামিলি নিয়ে ঘুরে এসেছি, সারাদিন ছিলাম;অসম্ভব সুন্দর কেটেছে দিনটি। ঢাকার কাছে একদিনে বেড়িয়ে আসার মত আরেকটি সুন্দর স্পটের সন্ধান পাওয়া গেছে; আমার কাছে এটির রেটিং দশে ছয় থেকে সাত এর মধ্যে!
আমি ফ্যামিলি প্যাকেজ নিয়ে নিয়েছিলাম; চারজনের প্যাকেজ সাড়ে চার হাজার টাকা, এর মধ্যে কোন খাবার ইনক্লুডেড ছিল না। ড্রাই পার্ক, সাফারি পার্ক আর ওয়াটার পার্ক সহ মোট ২২ টি রাইড ফ্রি ছিল। এটি একটি ভালো অফার। কাপল অফারও আছে; আড়াই হাজার টাকা পড়বে এতে।
একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আছে এখানে; খাবারের দাম সীমার মধ্যে মনে হয়েছে। কিন্তু ডাকাতি করেছে ড্রিম চটপটি ও ফুচকার দোকান; আট পিস নিম্নমানের ফুচকার দাম রেখেছে ৮৬ টাকা এবং একটি বড় আলুর সমপরিমাণ ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের দাম রেখেছে ৯০ টাকা! আইসক্রিম, পানি, চিপস ও কফির দাম সীমার মধ্যে রয়েছে।
আপনি সাথে বাচ্চা নিয়ে গেলে আর হাতে সময় থাকলে ফ্যামিলি প্যাকেজ ভালো। আর তা না হলে সিঙ্গেল এন্ট্রি সিস্টেম ভালো, যেটা ভালো লাগল ছড়লেন, ভালো না লাগলে চড়লেন না। এন্ট্রি ফি ৩০০ টাকা প্লাস ৭.৫% ভ্যাট আট বছরের উপরের সবার জন্য আর ২০০ টাকা প্লাস ৭.৫% ভ্যাট ৩-৮ বছর বয়সীদের জন্য। তিন বছরের নীচে ফ্রি। একই নিয়ম ওয়াটার পার্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ওয়াটার পার্কে ঢুকতে হলে আগে ড্রাই পার্কে ঢুকতে হবে।
এখানকার ওয়াটার পার্ক আমার ভালো লেগেছে, দুটি পুল; একটিতে স্লাইডসহ অন্যান্য আয়োজন আছে, আরেকটিতে ডিজে এর তালে তালে ঢেউয়ের খেলা আছে। দুটি মিলিয়ে বেশ বড়সড় একটি স্পেস। ভিতরে দোকান আছে, চাইলে কফি, চিপস, আইসক্রিম এসব খাওয়া যাবে। এখানে অনায়াসে দুই তিন ঘন্টা সময় পার করে দেয়া যায়।
রিভার ক্রুজের চমৎকার ব্যবস্থা আছে, আছে তিন ধরনের সিস্টেম; স্পীড বোট, স্টিমার ও লঞ্চ। চাইলে একটিতে বা সবকটিতেই চড়তে পারেন, তবে রাস্তা একই। এখানে নন্দন ও ফ্যান্টাসি স্ট্যান্ডার্ডের মাত্র একটি রাইডই আছে বলে আমার মনে হয়েছে, তা হলো সুইং মটর বাইক; সেকারণই কিনা, এখানকার কাস্টমার বেজটা আলাদা! কিন্তু আরো অনেক ভালো রাইড আছে, যেগুলো বাচ্চাদের অনেক আনন্দ দিবে।
খুব ভালো লেগেছে এখানকার সাফারি পার্কের হরিণগুলো। ফাঁকে ফাঁকে কিছু রাইড আছে যেগুলো বাচ্চাদের জন্য ফ্রি। এখানে প্রচুর পরিমাণ ওয়াশরুম আছে, যেটি একটি পজিটিভ দিক, আছে নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও। এখনকার কর্মীদের আচরণ আমার ভালো লেগেছে।
আমার যেসব রাইড ভালো লেগেছেঃ
- ওয়াটার পার্ক
- ফ্যামিলি বোট
- সুইং চেয়ার
- এয়ার বাই-সাইকেল (এটা আর কোথাও পাইনি; এটা দারুণ)
- স্পিড বোট
- বাম্পার কার
- ভুতের বাড়ি (১০০ টাকা হিসেবে তত ভালো নয়; আরো ভালো করতে পারত)
- সুইং মটর বাইক
- ক্যাবল কার
- কাইট ফ্লাইং
- রিভার ক্রুজ
- সাফারি পার্ক।
আমার যেসব রাইড ভালো লাগেনিঃ
- ড্রিম আই (গোলাকার পৃথিবী)
- হেলিকপ্টার (ভুলেও এটাতে চড়বেন না)স্পেস শিপ (বাচ্চাদের জন্য; এটা ভালো না)
- বুল রাইড
- রোলার কোস্টার
- বুলেট ট্রেন
.
আরো কিছু রাইড ছিল যা একেবারে বাচ্চাদের জন্য; সেগুলোর কথা বলতে পারব না।
.
ড্রিম হলিডে সাজানো হয়েছে অত্যন্ত যত্ন করে; আয়োজকদের প্রশংসা করতেই হয়, যদিও সমালোচনার জায়গা থেকেই যায়। এটিতে এভেইল করার রেট একটু বেশী মনে হয়েছে আমার, তবুও দর্শনার্থীর অভাব নেই। এটি আয়তনে বিশাল বলে, অনেক লোক ঢুকলেও বোঝা যায় না, রাইড চড়ার জন্য খুব বেশী বড় লাইন তাই ধরতে হয় না।
~
দেশে বা বিদেশে যেখানেই ভ্রমণে যান, খেয়াল রাখুন যেন আমার আপনার কারণে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়। হ্যাপি ট্রাভেলিং।