বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

খুব আগ্রহ ভরে যখন শিশুপার্ক অংশে যখন প্রবেশ করলাম, তখন আসিফের গান চলছে ‘এত কষ্ট, মেনে নেয়া যায় না, মেনে নেয়া যায় না!’ আজকের জন্য খুবই বেমানান গান, মানুষ সাফারি পার্কে এসে আজ আনন্দে আত্মহারা, আর ওরা কষ্টের গান বাজাচ্ছে! তবে আমার বড় ছেলে যখন সাফারি বাউন্সে লাফাচ্ছিল, তখন কানে এলো ভিন্ন মাত্রার ফোক গান “প্রাণবন্ধু আসিতে কত দেরি, সখীরে …প্রাণবন্ধু আসিতে কত দেরি’!!

অগনিত দর্শকে আজ বোঝাই ‘বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক’, বিশাল এরিয়া নিয়ে করা হয়েছে এই পার্কটি। মোট চার ধরনের টিকেট কেনার সুযোগ রয়েছে, দাম সীমার মধ্যে। খুব আগ্রহ নিয়ে আফ্রিকান সাফারি দেখার জন্য গাড়িতে উঠলাম, নিরীহ গোছের কিছু সিংহ, হরিণ, জিরাফ, জেব্রা, একটি বাঘ, দুটি ভালুক দেখে ফিরে এলাম। ডিসকভারি চ্যানেল প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল বলে কিছুটা হতাশ হলাম!

এখানে এতকিছু আছে যে বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না; আছে চমৎকার ম্যাকাউ ল্যান্ড, প্যারট এভিয়ারি, মেরিন এ্যাকুরিয়াম, দৃষ্টিনন্দন ফিজেন্ট এভিয়ারি এবং ধনেশ এভিয়ারি।

একটি ছোট সুদৃশ্য বাটারফ্লাই জোন আছে; সাকুল্যে চারটি প্রজাপতি দেখেছি, আছে মিউজিয়াম, ফিস জোন, ক্রোকোডাইল জোন, বড় সাইজের অনেকগুলো অজগর আর রয়েছে হাতির পিঠে চড়ার ব্যবস্থা।

বিপুল পরিমাণ পাখির সমাগম আছে সেখানে, বড় বড় লেকে বিশাল সাইজের সাদা আর কালো রাজহাঁস ভেসে বেড়াচ্ছে, বকের আস্তানায় দেখা গেল দুটো অতি ছোট সাইজের বক; একেবারে সম্প্রতি তারা ধরনীতে এসেছে, ফেসবুক ব্যবহার করতে জানলে হয়তো স্ট্যাটাস দিত বাবা-মা!

শেষ পর্যন্ত ভালো লেগেছে; শিশুপার্কটিও সুন্দর। লোকজন আজ উপচে পড়ছে, প্রায় সবই আমার মত আমজনতা। এলিট ক্লাসের লোকেরা সচরাচর এসব জায়গায় আসেনা। তাদের আনন্দ প্রকাশের আলাদা ভাষা আছে। এই প্রাঙ্গনে আজ অতি সাধারনদের মুখে যে অনাবিল হাসি, তা বার বার আমাদের বিজয়ের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

(২০১৭ সালের গল্প)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top