সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley)
ভ্রমনপিপাসু যারা আছেন, তাদেরকে একবার অন্তত সাজেক যেতেই হবে, এটাই প্রথম এবং শেষ কথা! ৭-ই জুনের ট্রিপে গিয়েছিলাম সেখানে; যা বুঝলাম, এই সিজনটাই বেস্ট, কারণ, এখন মেঘ, বৃষ্টি, রোদ, ঝর্ণার পানি সবই একসাথে মিলবে; ভরা বর্ষায় হয়ত চলাফেরায় কষ্ট হবে!
খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিমি, যেতে সময় লাগে মোটামুটি তিন ঘন্টা; এর মধ্যে দীঘিনালা উপজেলা পেরিয়ে বাঘাইহাট উপজেলা থেকে সাজেক পর্যন্ত যেতে হয় আর্মি এসকর্টে। মূল বাহন চাঁন্দের গাড়ি; কেউ কেউ মটরসাইকেল (ভাড়া) নিয়ে যায়, তবে এটি সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের এই ভুল করা উচিত নয়, এছাড়া অনেকে প্রাইভেট গাড়ি নিয়েও যায়।
ভবিষ্যতে যারা যাবেন, প্রচলিত চাঁন্দের গাড়ি ভাড়া না করে, সম্প্রতি বের হওয়া সাদা রঙের টাটা জেনন জিপ গাড়ি ভাড়া করবেন, এতে আরাম করে যাওয়া যায়, এর সিটগুলো কোস্টারের মত, ভাড়াও প্রতিজন হিসেবে কম; প্রচলিত সবুজগুলো ১০ জনের জন্য ৮,১০০ টাকা, সাদাগুলো ১৬ জনের জন্য ৯,৭০০ টাকা।
অসম্ভব ব্যস্ত এই সময়ে সাজেক। আমরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরে পৌঁছে রিসোর্টে না ঢুকে চলে গেলাম হ্যালিপ্যাডে; ততক্ষনে পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যের দূর্বল রশ্মি পূবের পাহাড়ে যেন বিছিয়ে পড়েছে, স্তরে স্তরে সাজানো পাহাড়গুলো সেই রশ্মিতে একেকটি একেক রঙ ধারণ করেছে। পর্যটকরা হ্যালিপ্যাড থেকে চতুর্দিকে দৃষ্টি বোলাতে লাগলেন যাতে কিছুই দৃষ্টি থেকে বাদ না পড়ে; অদূরেই রয়েছে জিরো পয়েন্ট, তার উপর ছেয়ে আছে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ, তার কিছু পরেই আছে ভাঙাচুরা একটি মসজিদ যেখানে একটি ট্যাঙ্কি থাকলেও পানির কোন ব্যবস্থা নেই!
ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্ট (Madventure Resort Sajek)
আমাদের রিসোর্টের নাম ছিল ‘ম্যাডভেঞ্চার’। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়েছি দ্রুত; মশারি টানিয়ে রুমের জানালা খুলে দিয়েছিলাম, ওপাশের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে শীতল বাতাস সারারাত জানালা দিয়ে আসা যাওয়া করেছে। ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে রিসোর্টের বারান্দায় গিয়ে যে দৃশ্য দেখলাম, তা এই প্রথম; জমে থাকা মেঘ আলোআঁধারিতে এমন মনোরম দৃশ্য সৃষ্টি করেছে চোখ ফেরাতে পারছিলাম না! নামাজ পড়ে দ্রুত রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে হ্যালিপ্যাডে গেলাম, লোকে লোকারণ্য সেখান থেকে সূর্যোদয় দেখার জন্য; সূর্য ধীরে ধীরে দেখা দিল, সূর্যরশ্মি মেঘের উপর পড়ে যে দৃশের অবতারনা করল, তার বর্ণনা কেবল সাহিত্যেই মেলে।
কংলাক পাহাড় (Konglak Pahar)
সকালের নাস্তা সেরে, কংলাক পাড়ায় যাওয়ার আয়োজন হলো; এটি সাজেকের সবচেয়ে উঁচু জায়গা, পাহাড় বেয়ে ওঠার মধ্যে একটি মজা আছে। ১০ টাকা দিয়ে লাঠি কিনে সেটিতে ভর দিয়ে উঠতে শুরু করলাম, উপরে পৌঁছে কংলাকের সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হলাম। তখন বেলা ১১ টা, মাথার উপর গণগণে সূর্য, দূরে নীলাভ আকাশ, স্তরে স্তরে সাজানো সবুজ পাহাড় আর টিলার উপর বাঁশঝাড় এক অদ্ভুত দ্যোতনার সৃষ্টি করেছে। সেখানে সবকিছুর দাম বেশী, ৩০ টাকার পানির বোতল ৬০ টাকা, ১০ টাকার নিম্বু পানি ৩০ টাকা; সাজেকে পানির মূল্য বেশী।
সাজেক ছাড়ার সময় ঘনিয়ে আসছে, ক্লান্ত হয়ে জিরো পয়েন্টের কাছে বসে আছি। হটাত দেখলাম আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে কালো মেঘ, স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে দূর পাহাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। সহসাই শীতল বাতাস আমাদের ক্লান্তি উবে নিয়ে গেল, তার কিছুক্ষণ পর সেই মেঘ থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টি আমাদের ছুঁয়ে দিয়ে গেল; আমাদের সঙ্গীরা রিসোর্ট থেকে নেমে মাচায় গিয়ে মেঘের মধ্যে নাচতে লাগল; সাজেকের সব সৌন্দর্য আজ একসাথে ধরা দিয়েছে; এক্ষনে সাজেক দেখার ১৫ কলা পূর্ণ হলো!
বিদায়…
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাজেককে বিদায় দিয়ে আর্মি এসকর্টে বেরিয়ে এলাম বিকেল ৩ঃ১৫ তে। ৫ টা নাগাদ হাজাছড়া ঝর্ণার কাছাকাছি পৌঁছলাম, সেখান থেকে ১৫ মিনিট হেঁটে একেবারে ঝর্ণায়। প্রস্ততি নেয়াই ছিল, দৌড়ে চলে গেলাম ঝর্ণার নীচে, তীব্র গতিতে নেমে আসা পানির নীচে তিনদফায় ভিজলাম প্রায় ২০ মিনিট; ষোলকলা পূর্ণ হলো এই ট্যুরের! এই ঝর্নাটি বেশ চওড়া, এতে গোসল করার আয়োজন মাধবকুন্ড ঝর্ণার মত। সন্ধ্যে সাতটার দিকে হাজাছড়া ঝর্ণাকে পেছনে ফেলে খাগড়াছড়ির দিকে রওনা দিলাম, রাতের খাবার হোটেল মনটানা’য় খেয়ে বাসে গিয়ে উঠলাম; সচেতনে কিংবা অবচেতনে, বারবার মনে উঁকি দিচ্ছে গত দুইদিনের অনবদ্য সব স্মৃতি; চোখে ভেসে উঠছে ছোট ছোট পাহাড়ী বাচ্চাদের নিষ্পাপ চোখের চাহনি আর হাত নেড়ে নেড়ে শুভেচ্ছা জানানোর প্রীতিময় দৃশ্য!
(বি.দ্র. রিসাং ঝর্ণার নীচে দেখেছি আমাদের ট্যুরিস্ট ভাইয়েরা গোসল করার পর শত শত হাফপ্যান্ট-লুঙ্গি যত্রতত্র ফেলে রেখে চলে গেছে, এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু; আমাদের মানসিক দৈন্য প্রকাশ করে। এখানে সেখানে ছড়িয়ে রয়েছে চিপসের প্যাকেট। আমাদের কারনে যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ব্যহত না হয়, সেদিকে নজর রাখার বিশেষ অনুরোধ রইলো। আর অবশ্যই পানির অপচয় করবেন না, সেখানে পানির সঙ্কট বেশী; হ্যাপি ট্রাভেলিং)
Hi there! Do you know if they make any plugins to assist
with Search Engine Optimization? I’m trying to get my site
to rank for some targeted keywords but I’m not seeing very good gains.
If you know of any please share. Kudos! You can read similar article here:
Eco product
prescribed azithromycin 500 b how can i buy priligy in usa
cost of cheap cytotec pills However one needs to sit down with a physician to review all potential side effects even with short term use
Ищите в гугле
x12ymm