ফজরের এলার্মে ঘুম ভেংগেছে, দূরের মসজিদ থেকে ইমাম সাহেবের সাবধানবাণী ভেসে আসছে, তিনি নামাজ পড়ার বাধ্য বাধকতা নিয়ে কথা বলছেন; আমি জানি, গ্রাম অঞ্চলে এই প্র্যাকটিসটা আছে।
আমি আর আমার বন্ধু বাশার নামাজ পড়ে নিলাম। রাতের কুয়াশায় তাঁবুর উপরিভাগ হালকা ভিজে গেছে, তাতে অবশ্য আমাদের অসুবিধা হয়নি। নামাজ পড়ে সমুদ্র দেখতে বেরিয়েছি, পিছন ফিরে দেখি আমাদের তাঁবুগুলো কুয়াশায় ঢাকা। সূর্য উঠি উঠি করছে, কুয়াশার সাথে পেরে উঠছে না।
সোনাদিয়া হচ্ছে লাল কাঁকড়ার স্বর্গ। লাজুক লতার চেয়েও লাজুক এরা, কাউকে দেখলেই টুশ করে গর্তে ঢুকে পড়ে, নইলে কি সুন্দর তির তির করে চলাফেরা করে নতুন হাঁটতে শেখা বাবুদের মত। অনেক কসরত করে দুটোর ভিডিও করেছি, দেখতে পারেন।
বীচ ধরে ডানে হাঁটছি, উদ্দেশ্য শেষ মাথায় যাওয়া, হটাৎ পিছন ফিরে দেখি ঝাউবনের উপর দিয়ে সূর্য তেজ নিয়ে উঁকি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় সবাই বেরিয়ে এসেছে এবং তীরে দাঁড়িয়ে ভোরের জোয়ারে ঢেউয়ের তীব্র গর্জন শুনছে।
নাস্তা শেষে বেরিয়ে আসার পালা। আমরা ছিলাম কিবরিয়ার ক্যাম্পসাইটে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ এর মত তাঁবু ছিল কালকে সোনাদিয়ায়। এখানে মোট ৪/৫ জন ক্যাম্পসাইট চালায়। ফেরার পথে দেখলাম মহিষের পাল পানি পান করছে, ভেড়াগুলো চরে বেড়াচ্ছে। ঝাউগাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে নৌকার দিকে এগোলাম; পিছনে পড়ে রইল পাখির কিচিরমিচির ডাক আর লাল কাকড়ার সোনাদিয়ায় এক দিনের স্মৃতি।