![পাহাড়ি ঝর্ণার টানে - ৪ 1 পাহাড়ি ঝর্ণার টানে - ৪](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/09/পাহাড়ী-ঝর্ণার-টানে-০৩-2-1024x768.jpg)
বন্ধু সাজ্জাদের হৈ হল্লায় ঘুম ভাংগল; যদিও ততোক্ষণে ফজরের জন্য এলার্মও বেজে উঠেছে। সামান্য একটু পানি রাতেই যোগাড় করে রেখেছিলাম, তাই দিয়ে ওযু সারলাম। সাজ্জাদের বিচরণ আমাদের ঘর ছাড়িয়ে জেটলি’র মা’র ঘর পর্যন্ত, এমনকি এই পাড়া যার নামে সেই হাজীরামের ঘর পর্যন্ত পৌঁছেছে! তার যেহেতু সিগারেট শেষ হয়ে গেছে, সে ইতোমধ্যেই আমাদের ঘরের মালকিন অর্থাৎ লারমতির মা’র কাছে থেকে বিড়ি নিয়ে খেয়েছে, জেটলি’র মা’র কাছ থেকেও বিড়ি নিয়েছে, এমনকি হাজীরামের শ্যালিকার কাছ থেকেও বিড়ি নিয়ে খেয়েছে!
নাস্তার দেরি দেখে ভাবলাম একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি; পূবে সূর্য ইতোমধ্যেই উঠে গিয়ে তার দ্যুতি ছড়াচ্ছে। সূর্যের আলো পশ্চিমের পাহাড়ে আছড়ে পড়ে এক অদ্ভুত দ্যোতনার সৃষ্টি করেছে। আমরা চার বন্ধু ধীরে ধীরে এই পাহড়ের চূড়ায় যেখানে মাচা আছে, সেখানে চলে গেলাম। এখান থেকে তিনদিক পুরো চোখে পড়ে; এ দৃশ্য ভোলার মত নয়, স্রস্টার কি সুনিপুণ সৃষ্টি এটি তা কেবল অনুভবই করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এখান থেকে অনায়াসে দেখা যায় দুটি বিখ্যাত পাহাড়, রুংরাং আর কির্সতং। ইচ্ছে থাকলেও এগুলোতে যাওয়া হবে না, এগুলি জয় করা কঠিন।
মাচা থেকে নেমে এসে নাস্তা করতে বসলাম। এরপর ব্যাগ গুছানোর পালা। হাজীরাম কারবারি আমাদের সাথে দেখা করতে এসেছেন; খুব হাসিখুশি মানুষ তিনি। আমরা ব্যাকপ্যাক কাঁধে নিয়ে রওনা দিলাম। আজকের গন্তব্য, প্রথমে থানকোয়াইন ঝর্ণা, পরে দুছরি বাজার। সেখান থেকে নৌকায় আমতলী ঘাট এবং এরপর চান্দের গাড়িতে করে চকরিয়া। গতকাল যারা থানকোয়াইনে গোসল করতে পারেনি, তাদের জন্য আজ একটা সুযোগ আছে; অনেকেই সেই সুযোগ কাজে লাগানোর সংকল্প করে সামনে এগোলো।
দুছরি বাজার এসে ধুপধাপ করে তিনটি সিদ্ধ ডিম খেয়ে নিলাম, সময় তখন দুপুর দুইটা। কিন্তু মাথায় বাড়ি পড়ার মত দুঃসংবাদটি এলো তারও ঘন্টাখানেক পরে; যখন শুনলাম, খালে পানি আসতে দেরি হবে, আমরা যদি অপেক্ষা করি, তাহলে চকরিয়া থেকে গাড়ি মিস করতে পারি। অতএব, মাঝিদের পরামর্শ হলো, এখনি ১৩ কিলোমিটার নামক জায়গা দিয়ে আলীকদম চলে যাওয়া। দুছরি বাজার থেকে এই ১৩ কিমি নামক জায়গা হলো তিন ঘন্টার ট্রেকিং, যেখানে আড়াই ঘন্টা ঝিরি পথে এবং বাকি আধাঘন্টা খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠতে হয়।
সবারই শরীর ছেড়ে দিয়েছিল; নৌকায় করে আরামে যাবার প্রস্ততি নিচ্ছিল। এই খবরে টিম কার্যত দুই ভাগ হয়ে গেল; এক ভাগ বিকেল হলেও নৌকায় যাবে, আরেক ভাগ হেঁটেই যাবে। অতঃপর রুদ্রের নেতৃত্বে এই সমস্যারও সমাধান হলো; কিঞ্চিৎ দেরিতে হলেও ভগ্ন মনোরথে সবাই মিলে ১৩ কিলোমিটারের দিকে হাঁটা দিলাম; পিছনে পড়ে রইল বিখ্যাত তৈনখাল ও দুছরি বাজার।
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good.