কেমন দেখলাম দিনাজপুরের রামসাগর
রামসাগর দেখার শখ অনেকদিনের, হটাৎ করেই সুযোগ মিলে গেল। দিনাজপুরের নিমতলার বিখ্যাত মুন্সীর হোটেলে লাঞ্চ সেরেই একটা অটো রিজার্ভ করে রওনা দিলাম। ১২ কিলোমিটার রাস্তা, সময় লাগল প্রায় ত্রিশ মিনিট।
অটো নিয়েই ভিতরে ঢুকলাম, শুরুতেই দৃষ্টি কাড়ল ঘন বন। এরপরই দেখা মিলল বিখ্যাত রামসাগরের, বিশাল সাইজের চোখ জুড়ানো এক দীঘি, আরো দেখা গেল এক ঝাঁক সাদা হাঁস, পাল তোলা নৌকার মত আয়েশ করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই দীঘির চতুর্দিকে সুন্দর বাঁধাই করা রাস্তা আছে, রাস্তার ওপাশে অতি মনোরম সবুজ বনানী। পুরো এলাকা জুড়েই ঘন জঙ্গল, যেগুলো শীতকালে পিকনিক স্পট হিসেবে বেশ সমাদৃত।
ঐতিহাসিকদের মতে, দিনাজপুরের বিখ্যাত রাজা রামনাথ (রাজত্বকাল: ১৭২২-১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দ) পলাশীর যুদ্ধের আগে (১৭৫০-১৭৫৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে) এই রামসাগর দিঘি খনন করেছিলেন। তারই নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় রামসাগর। দিঘিটি খনন করতে তৎকালীন প্রায় ৩০,০০০ টাকা এবং ১৫,০০,০০০ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়েছিল।
উইকিপিডিয়া
রামসাগর পাড়ে কপোত কপোতিদের বসার জন্য চার ধরনের সিস্টেম আছে; কার্জন হল সিস্টেম, বোটানিক্যাল গার্ডেন সিস্টেম, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সিস্টেম এবং জাহাংগীরনগর ইউনিভার্সিটি সিস্টেম! সবাই ক্যাটাগরি অনুযায়ী সময় উপভোগ করছে।
এখানে আসলে অবশ্যই সাঁতারের পোষাক আর প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন, লোভনীয় এক শান বাঁধানো ঘাট আছে! একদল ছেলে ঈর্ষণীয় উদ্দামতায় গোসল করছে! আরো আছে সাম্পান ভাড়া করে পুরো রামসাগর ঘোরার ব্যবস্থা, সব মিলিয়ে এক অপরুপ সম্মিলন।
অটো নিয়ে পুরো দীঘিটা ঘুরে আসা যায়, আমি তাই করেছি। এখানে ঢাকার চিড়িয়াখানার দোকানের মত অনেক খাবারের দোকান আছে, আছে ছোট্ট একটি শিশুপার্ক। জঙ্গলে নানান বর্ণের ফুল ফুটে আছে। বিশাল এই দীঘিটি প্রথম দেখাতেই ভালো লাগে, এক ধরনের কোমল স্নিগ্ধতা আছে এর বাতাসে; সহজেই মন ভালো হয়ে যায়।