- দেখতে পারেন: সিলেট ভ্রমণ – ১
ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর ঘুরতে না পারলে মানইজ্জত আর থাকছিল না; অনলাইন ট্যুর অর্গানাইজাররা এমনভাবে এড দিচ্ছিল, যেন এখানে না যেতে পারলে জীবন বৃথা! ছুটি যেহেতু মাত্র একদিন, তাই জাফলং থেকে ফিরে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বেরিয়ে পড়লাম; সাদাপাথর পৌঁছলাম তিনটার কিছুটা পরে।
এখানে সিস্টেম খুব সুন্দর; ইঞ্জিন চালিত নৌকা এখানে ঘাট থেকে ভাড়া করতে হয়, সেজন্য একটি টিম আছে; ভাড়া ৮০০ টাকা। সাধারণত ১০-১৫ জন যেতে পারে, আমি একটি নৌকা ভাড়া করে রওনা দিলাম, সময় লাগল ১৫ মিনিটের মত। এই টাকায় সেখানে দুই ঘন্টা অবস্থান করা যায়, এটাই নিয়ম।
মাঝি সাদাপাথরের যে জায়গাটায় নামিয়ে দিয়েছে, সে অংশের পানিতে নেমে মনে হলো নিজের গ্রামের পুকুরে নেমেছি; তবু মনকে প্রবোধ দিতে লাগলাম, এর মধ্যেই বোধকরি আনন্দ আছে!
লোকে লোকারণ্য জায়গাটি কিন্ত কেউই পাড় থেকে দূরে যাচ্ছে না আর অধিকাংশই ছবি তোলায় ব্যস্ত। এখনকার ট্যুরিজমের বাজে দিকটি হলো, অধিকাংশ ট্যুরিস্টকে দেখলে মনে হবে তারা কেবল ছবি তুলতেই এসেছে।
আমি আর আমার বড় ছেলে শায়ান অনেকটা দূর দিয়ে সামনে এগোতে থাকলাম; স্বচ্ছ পানি দিয়ে নীচের অনেক পাথর দেখা যায়। যতই সামনে এগোচ্ছি, ততই স্রোতের বেগ বাড়ছে; মূলতঃ এটি ভারতের কোন এক বা একাধিক ঝর্ণা থেকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসা পানির স্রোত। এ স্রোত সামলানো কঠিন।
যেখান থেকে বাঁক নিয়ে স্রোত দ্রুতবেগে প্রবাহিত হয়ে ধলাই নদীতে মিশেছে, সেখানে যেতে রীতিমত কষ্ট হচ্ছিল। শায়ানকে পাথরের উপর তুলে দিয়ে নিজে ট্রাই করছিলাম। এই স্রোতের সাথে পাল্লা দেয়া আর পাথর ধরে রেখে বা পাথরে পা ঠেকিয়ে স্রোতের নীচে মাথা চালান করে দেয়াটাই হলো সাদাপাথরের অরিজিনাল অনুভূতি; যার সন্ধান ৯০ ভাগ ট্যুরিস্টই পায় না!
যতক্ষণ শরীরে কুলালো ততক্ষণ এভাবেই কাটালাম, এরকম অনুভূতি পেয়েছিলাম বিছানাকান্দিতে, সুতরাং আমি জানি এর মাজেজা। তবে এখানে সামনের দিকে স্রোত এত বেশী, কেউ যদি একটি নির্দিষ্ট সীমার বাইরে যায়, তাহলে সে কিছুতেই এই স্রোতের সাথে পেরে উঠবে না।
আমার স্ত্রী যখন অনেক খুঁজেও একটি ধবধবে সাদাপাথর পাচ্ছিলেন না, তখন বুঝলাম এমনি করেই পর্যটকেরা সাদাপাথর নিয়ে গেছে; অথচ সাদাপাথরে সাদাপাথর থাকাই বাঞ্চনীয় ছিল!
সাদাপাথর যাবার সময়কার দৃশ্য জাফলং এর পথের থেকেও সুন্দর, অনেকটা শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙে প্রবেশপথের মত একটা অনুভূতি হয়। ফেরার পথে দুটি মটর সাইকেলে পাঁচজন তরুন ফলো করছিল আমাদের গাড়িকে, ড্রাইভার সাহেব জোরে টেনে বের হয়ে গেছেন। তবে তারা আমাদের ছেড়ে দিয়েছে এটিই বরং বলা ভালো, হয়তো ভেতরে বাচ্চাকাচ্চা দেখে দয়া করেছে; হোটেল থেকেও আমাদের বলে দেয়া হয়েছিল সন্ধ্যার আগে ফিরে আসতে!
সাঁঝের আলো মিলিয়ে আসছিল, ডানে তাকিয়ে দেখি হাওড়ের ওপাশ দিয়ে দিনের সূর্য রক্তিম আভা ছড়িয়ে আজকের মত বিদায় নিচ্ছে। খানিক আগের ভীতিটুকু কেড়ে নিয়েছে এই পশ্চিম আকাশ তার সবটুকু রং ছড়িয়ে দিয়ে; সাথে বেজে উঠেছে বিদায়ের করুন সুর।
সাদাপাথর থেকে ফিরে আসার সময় একেবারে ঘাটের কাছাকাছি এসে দেখলাম, আমাদের নৌকার পাশ দিয়ে বেশ কয়েকটি বিরিয়ানির পরিত্যক্ত প্যাকেট ভেসে যাচ্ছে! মনটা খারাপ হয়ে গেল, এত বড় জায়গা রেখে কেন পানিতেই তা ফেলতে হবে। সবাই সতর্ক থাকুন এ বিষয়ে।
I like this site it’s a master piece! Glad I noticed this ohttps://69v.topn google.Blog range
Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.