রবার্টসন সুইটস হোটেল – (লংকাউই-মালয়েশিয়া – ৫)

রবার্টসন সুইটস হোটেল - (লংকাউই-মালয়েশিয়া - ৫)

তিনদিন হলো আজব এক হোটেলে আছি, নাম রবার্টসন সুইটস (Robertson Suites); এই হোটেলের কোন রিসেপশন নেই, কোন স্টাফ চোখে পড়ে না, এ পর্যন্ত দেখিনি কে বা কারা এটা চালায়! বিরাট বড় হোটেল এটি, নর্থ ও সাউথ টাওয়ার নামে দুটি ৪৬ তলা বিল্ডিং এর সমন্বয়ে এটি গঠিত, যার ৭ তলায় নর্থ ও সাউথ বিল্ডিংকে কানেক্ট করে বিরাট এক সুইমিং পুল রয়েছে। তারা অবশ্য এটাকে হোটেল বলে না, বলে হোম-স্টে! এসব তথ্য হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দিয়েছে রবার্টসন কর্তৃপক্ষ। 

উইগো এপ দেখে আমি নিজেই এটি পছন্দ করেছিলাম; আমার ক্রেডিট কার্ড না থাকায় ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে বুকিং করেছি দুই মাস আগে। আমাদের সুইট পড়েছে ৩১ তলায়। একটি মাস্টার বেড ও তার বাইরে একটি সোফা বেড এবং একটি ডাইনিং টেবিল আছে, আছে একটি কিচেনও। এখানে প্রবেশ করা অনেকটা রাজকুমারের সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে রাজকুমারিকে উদ্ধার করে আনার মত।

হোটেল কনফার্ম করার পরপরই তারা এখানে প্রবেশ করার যে ইন্সট্রাকশন দিয়েছে, তাতেই ভয় পেয়ে গেছি; মনে হয়েছিল ঢুকতেই পারব না! যাই হোক, এখানে এসে প্রথমে হোটেল গেইটের বাইরে একটি লকার পাওয়া যায়। পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রথমে লকারটা খুলতে হয়, এরপর সেখানে অনেকগুলো বক্স থেকে নিজের নাম্বারের বক্সটি আবার পাসওয়ার্ড দিয়ে খুলতে হয়। সেই ছোট বক্সের মধ্যে চাবি রাখা থাকে। চাবি নিয়ে এই দুটি বক্সের পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দিতে হয়।

খেলা এখানেই শেষ নয়; এই চাবির কার্ড পাঞ্চ না করলে গেইট ওপেন হয় না, লিফট কোন কমান্ড নেয় না! এই চাবি হারালে ২০০ রিংগিত জরিমানা, দরজার বাইরে জুতা রাখলে ১০০ রিংগিত জরিমানা, রান্নাঘর নোংরা করে রাখলে ১০০ রিংগিত জরিমানা আর রুম ক্লিনিং এর জন্য অতিরিক্ত ৬০ রিংগিত! এক রিংগিত সমান বর্তমানে ২৬ টাকা।

আজ এখানে শেষ দিন। তিনদিনে কোন স্টাফ দেখিনি, আর দেখব বলেও মনে হয় না। এখানে থাকার অভিজ্ঞতা চমৎকার, রুম থেকে বাহিরে দৃষ্টি দিলেই মালয়েশিয়ার স্কাই স্ক্র‍্যাপারগুলো হাত নেড়ে মিতালি করতে চায়। ৪২ তলায় ও ৪৬ তলায় গার্ডেন আছে, দেখতে যাওয়া হয়নি; আরো আছে ফিটনেস সেন্টার, বাচ্চাদের খেলার জায়গা, আরো কিসব আছে, সুইমিংপুল বাদে কোথাও যাওয়া হয়নি।

.এখানে এলে বুকিত বিনতাং এলাকার এই অদ্ভুত সিস্টেমের হোটেলে একবার থেকে যেতে পারেন; দেখতে পারেন, কিভাবে ৪৬ তলার দুটি বিল্ডিং অটোমেটিক চলছে! আর এর সুইমিংপুলের মধ্যে গা ডুবিয়ে কিনারায় দাঁড়িয়ে শহর দেখতে কিন্তু বেশ লাগে!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top