![ক্রাংসুরি ঝর্ণা (Krangsuri) - মেঘের আলয়ে নিমন্ত্রণ - ৫ 1 ক্রাংসুরি ঝর্ণা (Krangsuri) - মেঘের আলয়ে নিমন্ত্রণ - ৫](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/09/Krangsuri.jpg)
শিলং থেকে যাত্রা শুরু করেছি বিখ্যাত ক্রাংসুরি ঝর্ণার দিকে; সেখানে জিপ লাইনিং করব, এই উত্তেজনা তো ছিলই আবার ভয়ও ছিল! ঘন্টা দুয়েক জার্নির পর, পৌঁছে গেলাম ক্রাংসুরি ঝর্ণার কাছাকাছি। খাবারের অগ্রীম অর্ডার দিয়ে নামতে শুরু করলাম সিঁড়ি বেয়ে। একসময় পৌঁছে গেলাম জিপ লাইনিং এর সেন্টারে।
জিপ লাইনিং দেখে আবার ভয় পেয়ে গেলাম! বললাম, টিমের কেউ একজন আগে যান আমি তারপরে আসছি, কেউ নড়ছে না; অগত্যা আমিই এগিয়ে গেলাম। গাইড আমাকে বেল্ট পরাতে পরাতে জিগ্যেস করল, তোমার ওজন কত? বললাম, ৮২ কেজি! সে ঢোক গিলল, তার ঢোক গেলা দেখে আমিও ঢোক গিললাম!
বেল্ট পরানো শেষ হলে সে আমাকে টেনে সামনে নিয়ে যাচ্ছিল; আমি কোরবানির ছাগল কেনার পর বাড়ি নেবার সময় ছাগল যেমন খিঁচ মেরে থাকে, তেমন খিঁচ মেরে রইলাম, বারবার মনে হলো, কেউ যেন আমাকে দুই পাহাড়ের মাঝখানে ফেলে দেবার জন্য টানছে!
শেষ পর্যন্ত জানটাকে হাতের মুঠোয় রেখে নেমেই পড়লাম শূন্যে! প্রথমটায় ভয় লাগলেও পরে বেশ আনন্দদায়ক মনে হয়েছে। ক্রাংসুরি ঝর্ণায় যাবার দুটি উপায়; জিপ লাইনিং করে অথবা সিঁড়ি বেয়ে। জিপ লাইনিং করে গেলে ৩০০ রুপি, সিঁড়ি বেয়ে গেলে ৫০ রুপি। জিপ লাইনিং এর অপর প্রান্তে একজন লোক থাকেন রিসিভ করে নামানোর জন্য।
সেখানে নেমে এগিয়ে চললাম ক্রাংসুরি ঝর্ণার পানে; এর সৌন্দর্য কেবল সাহিত্যিকের বর্ণনাতেই মেলে। এই ঝর্ণার শুরুতেই একটি বিরাট খুম বা লেকের সৃষ্টি হয়েছে; অনেকেই সেখানে সাঁতার কাটে, তবে লাইফ জ্যাকেট মাস্ট, ভাড়া ৫০ রুপি। সেখান থেকে ঘুরপথে মূল ঝর্ণার মুখোমুখি যাওয়া যায় এমনকি মূল ঝর্ণার খুমে সাঁতারও কাটা যায়।
তবে আমরা যেদিন গিয়েছি, সেদিন রাস্তা ভাঙ্গার কারনে মূল খুমে নামা নিষেধ ছিল, ফলে উপরের অংশেই সাঁতার কেটে নিজেকে নিবৃত্ত করতে হয়েছে। অজস্র পর্যটকের সমাহার হয় এখানে, সবাই যার যার মত করে এনজয় করছে। এখানে ভাড়ায় নৌকা চালানোরও সুযোগ আছে।
ক্রাংসুরি থেকে ফিরে দুপুরের লাঞ্চ সেরে রওনা হলাম ডাউকি’র দিকে; উদ্দেশ্য স্নোনেংপেডেং গ্রাম। সেখানে রয়েছে উমগট নদী আর বিখ্যাত সাসপেনশন ব্রীজ। আপাততঃ দৃষ্টি তাতেই নিবদ্ধ রাখলাম।