চেরাপুঞ্জি সেভেন সিস্টার্স ইকোপার্ক – মেঘের আলয়ে নিমন্ত্রণ – ৪

চেরাপুঞ্জি সেভেন সিস্টার্স ইকোপার্ক - মেঘের আলয়ে নিমন্ত্রণ - ৪

চেরাপুঞ্জির সেভেন সিস্টার্স ইকোপার্কটি আয়তনে বিশাল, আয়োজনে আড়ম্বরহীন কিন্তু দৃষ্টিনন্দন ও মোহনীয়। আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হয়েছে, এখানে আমাদের বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক পাওয়া এমনকি ফোরজি ইন্টারনেটসহ! যেখানে বান্দরবানের আলীকদম দূরে থাক, চকরিয়া রোড থেকে আলীকদমের দিকে এক কিলো গেলে বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, সেখানে এটা বিস্ময়করই বটে।

চেরাপুঞ্জি সেভেন সিস্টার্স ইকোপার্ক - মেঘের আলয়ে নিমন্ত্রণ - ৪

এখানে ছোট আকারের দুটি শিশুপার্ক আছে। আমরা যখন প্রবেশ করেছি, তখনো মানুষজন তেমন নেই, পুরো অঞ্চল মেঘে ঢাকা। বাংলাদেশ ভিউপয়েন্টে গিয়ে বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক দিয়ে বাসায় কথা বললাম, এরপর বামে ঘুরে টিলার উপরে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি শিশুদের দোলনাগুলো বেকার মেঘে ঢাকা পড়ে আছে; আমরা তার সদব্যবহার করতে শুরু করে দিলাম; আমার ওজনে যে স্লাইডগুলো ভেঙ্গে পড়েনি, সে-ই ঢের!

ইকোপার্কে যাবার আগেই মাওসোমাই কেভ আর নোহকালিকাই ঝর্ণা দেখে এসেছি। ইকোপার্ক থেকে বেরিয়ে গেলাম ওয়াকাবাহ ফলসে। সেখান থেকে বেরিয়ে গেলাম লাইটলুম ক্যানিয়নে; এই একটা জায়গায় ধরা খেয়েছি, মেঘের জন্য কিছু দেখতে পারিনি। বাই দ্যা ওয়ে, এই পথে যেতে ‘গ্রীন ভ্যালি’ দেখতে কিছুতেই ভুলবেন না। 

শিলং যাবার পথে এক জায়গায় আছে পাইওনিয়ার জিপ লাইনিং; আগ্রহভরে গেছি জিপ লাইনিং করতে, কিন্তু এটা এত দীর্ঘ যে দেখে কলিজা শুকিয়ে গেছে। জীবনে কোনদিন করিনি এই কাজ, তার উপর এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়, একবার যাওয়া একবার আসা, নীচে তাকালে বুক ধড়ফড় করে, এর চেয়ে বরং মেঘের মধ্যে চোখ বুঁজে বসে থাকা ভালো!

হোটেল পড়েছে শিলং পুলিশ বাজার থেকে দুই কিলোমিটার দূরে; আপনারা গেলে হোটেল নিবেন পুলিশ বাজারে। আর সেখানকার V2 শপটা ভিজিট করার অনুরোধ রইল; খুব রিজনেবল প্রাইসে জেন্টস, লেডিস ও কিডস ফ্যাশন উইয়ার পাওয়া যায় এখানে। এটা মসজিদের কাছাকাছি। আর পুলিশ বাজারের আপেলগুলো দামে কম কিন্তু স্বাদে অনন্য।

শিলং এর পুলিশ বাজার একটি জমজমাট এলাকা; মেঘালয়ের মেঘের সাথে এই এলাকার যেন কোন সংযোগ নেই। এখানে ত্রস্ত ভংগিতে মানুষের চলাফেরা আছে, রাত ৮ঃ৩০ এর মধ্যে মার্কেট বন্ধ হয়ে যায় বলে বিকিকিনির তাড়া আছে, ফুটপাতে হাঁকডাক আছে, সর্বোপরি মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে শহুরে জীবনের ছন্দ এখানে পুরোপুরিই আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top