তাকসিম স্কয়ার – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৩০/শেষ পর্ব)

তাকসিম স্কয়ার - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৩০/শেষ পর্ব)

আজ দেশে ফিরে যাবার পালা; বিকেল সাড়ে চারটায় ফ্লাইট, টিকেট কেটেছি এমিরেটস-এ, দুবাইতে ট্রানজিট আছে। ৬ষ্ঠ রাত হোটেল ফেভরিতে পার করে ঘুম থেকে উঠলাম; দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত থাকা যাবে হোটেলে, তখনই আমার গাড়ী আসবার কথা রয়েছে। ব্যাগ গতকাল রাতেই গুছিয়ে রেখেছি, আজ ফাইনাল চেক করে ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে গেলাম, উদ্দেশ্য ইশতিকলাল স্ট্রীট!

তাকসিম স্কয়ার থেকে একটা রোড চলে গেছে সিসলি’র দিকে, তার পাশ দিয়ে একটা রোড চলে গেছে, সেটাই ইশতিকলাল স্ট্রীট। এখানে আমাদের বেইলি রোডের মত বড় বড় শপিং মল আছে এবং সন্ধ্যার পর এটি জমতে থাকে। চওড়া রাস্তা রয়েছে এখানে, এর মাঝখান দিয়ে ট্রামের রাস্তা আছে যেখান দিয়ে বিখ্যাত লাল ট্রামটি চলাচল করে।

আমার আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল এখানে আসার, তা হলো প্যারা মিউজিয়াম দেখা। আমি জানি না, এই মিউজিয়ামে আসলে কি আছে, তবে অনেকের বাকেট লিস্টে এটি ছিল। প্যারা মিউজিয়াম এই ইশতিকলাল স্ট্রীটেই আছে, তবে এটি খুলবে সকাল দশটায় কিন্তু আমি এসে পড়েছি সকাল সোয়া নয়টায়। বাকি সময়টা এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করে কাটিয়ে দিলাম।

দশটায় প্যারা মিউজিয়ামে ঢুকতে গিয়ে দেখলাম আমার মিউজিয়াম কার্ড দিয়ে এটাতে ঢোকা যাবে না, আলাদা টিকেট কাটতে হবে; দাম জিগ্যেস করার আগেই দেখলাম মূর্তি দেখা যাচ্ছে, সহসা মনে হলো, এটা আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়ামের মতই কিছু একটা হবে। আগ্রহ পেলাম না, ফিরে এসে ইশতিকলাল স্ট্রীট ধরে তাকসিম পৌঁছে সেখানে গিয়ে বসলাম।

এর আগে দুদিন তাকসিম স্কয়ার দেখেছি রাতের আলোয়, আজ দেখলাম দিনের আলোয়; সুপরিসর আয়তন, সুন্দর করে সাজানো, এক পাশে সুদৃশ্য মসজিদ, আছে একটি মনুমেন্ট, আর অপর পাশে মেট্রো স্টেশন। এখান থেকে একাধিক মসজিদ চোখে পড়ে এবং খোলা জায়গা বলে ৩৬০ ডিগ্রি এংগেলে সবকিছু দেখা যায়।

সাড়ে এগারোটার দিকে তাকসিমের এক রেস্টুরেন্ট থেকে লাঞ্চ কিনে মেট্রোতে করে হোটেলে ফিরলাম; মেট্রোর কার্ডে সম্ভবতঃ ৩ লিরা রয়ে গেল; থাক এটা। হোটেল ফেভরিতে অনেক স্মৃতি রয়ে গেল; সেই স্মৃতি পিছনে ফেলে নয়, সাথে করে নিয়ে ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টের দিকে রওনা দিলাম।

দুবাই এয়ারপোর্টে নেমে দীর্ঘ পথ হেঁটে বাংলাদেশের ফ্লাইট যেখানে আছে সেখান অব্দি পৌঁছানো গেল; এই এয়ারপোর্ট কত বড়, তা বোধকরি ইতোমধ্যে অনেকেই জেনে গেছেন। বাংলাদেশের ওয়েটিং রুমে যখন গেলাম, তখনই কানে এলো সেই সুমধুর আলাপ; এক বাংলাদেশী ফোনে দেশে কথা বলছেন, ‘তুই হেতের ক ভাইয়া অন এয়ারফোর্টে আছি’, শুনে মনটা ভালো হয়ে গেল। মনে হলো যেন, অর্ধেক বাংলাদেশে এসে গেছি।

এরপর যতই সময় গড়াতে লাগলো, বাংলাদেশীর সংখ্যা বাড়তে লাগল; একসময় প্লেনে বোর্ডিং এর আগে একটা ছোটখাটো গুলিস্তান হয়ে গেল। এর মধ্যেই কেউ কেউ বিশ্বকাপ খেলায় মনযোগ দেবার চেষ্টা করছেন, সেদিন ছিল আর্জেন্টিনার খেলা। ৪/৫ জন ছোট ছোট বাচ্চা যত্রতত্র দৌড়াদৌড়ি করছে যেন এটা বাসা বাড়ি!

এই সব দিবা-রাত্রির গল্পের আসর পেরিয়ে একসময় এমিরেটস এর চাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্পর্শ করল, সময় তখন ১০ ই ডিসেম্বর সকাল ৮ টা। গত সাতদিন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম; বাংলাদেশের প্রকৃতিতে ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে বৈকি! যে কোন বিবেচনাতেই, ইস্তাম্বুলের এই ট্যুর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ট্যুর হয়েই থাকবে।

মনের আনন্দেই আমি ভ্রমণকাহিনী লিখি; কিন্তু এটি যে ৩০ তম পর্ব পর্যন্ত আসবে সেটি নিজেও বুঝতে পারিনি। যে অল্পসংখ্যক পাঠক পুরোটা সময় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে আবারো কোন ট্যুরের কাহিনী নিয়ে ফিরে আসব ইন শা আল্লাহ; আপনাদের কাছে দোয়ার দরখাস্ত রইল।

205 thoughts on “তাকসিম স্কয়ার – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৩০/শেষ পর্ব)”

  1. Hey! Do you know if they make any plugins to assist with SEO?
    I’m trying to get my blog to rank for some targeted keywords but I’m not seeing very good results.

    If you know of any please share. Kudos! You can read similar blog here: Eco blankets

  2. My spouse and I stumbled over here by a different web page and thought I may as well check things out. I like what I see so i am just following you. Look forward to going over your web page again.

  3. New York City never fails to amaze with its vibrant culture and endless attractions! The idea of walking across the Brooklyn Bridge and taking in those iconic views sounds like a dream, and a visit to the Empire State Building’s observation deck is always unforgettable. Central Park is a personal favorite – its charm changes beautifully with every season.

    On a related note, if you’re planning to make the most of your energy while exploring NYC, I recently came across Nervovive, a supplement that supports nerve health and helps you stay active. Pairing wellness with travel makes the experience even better!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top