এখানে মোস্তফা কামাল নামে একজন এসিস্ট্যান্ট ছিলেন; ইন্টারেস্টিংলি, আমরা চারজন ছিলাম চার দেশের। কিভাবে একজন বাংলাদেশী, একজন জর্ডানিয়ান, একজন লেবানিজ ও একজন টার্কিশ একাত্ম হয়ে উঠতে পারে মাত্র ৫ দিনে, এই সম্মিলন ছিল তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
গিফট, সার্টিফিকেট, ট্রেনিং ম্যাটারিয়ালসহ জিনিসপত্র বেশী হয়ে গিয়েছিল, তাই এগুলো প্রথমে হোটেলে রেখে বেরিয়ে পড়লাম। আজকে ইস্তাম্বুলে আমার শেষ রাত; গতকালই ছোটভাই মেহেদীর সাথে কথা হয়েছে, আজকে সে আমাকে জাহাজে করে এরদোয়ান মসজিদ তথা চামলিজা মসজিদে নিয়ে যাবে, আমাদের দেখা হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। এটি পড়েছে এশিয়া সাইডে, এখানে গেলে একসাথে দেখা হয়ে যাবে ইউরেশিয়া!
আমি দুপুরের পরপরই মিউজিয়াম অব টার্কিশ এন্ড ইসলামিক আর্টস দেখার আগ্রহ পোষণ করলাম। এটি না দেখে দেশে ফিরতে মন চাইছিল না। গত পরশু এসে ফিরে গেছি, এটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অতএব, আরেক দফা আয়া সোফিয়া চত্তরে যাওয়া পড়ল।
এই মিউজিয়ামটি আমি মাস্ট ভিজিট তালিকায় রাখব; আব্বাসী আমল, উমাইয়া আমলসহ আরো অনেক আমলের কোরআন থেকে শুরু করে নানান ধরনের ঐতিহ্যবাহী জিনিসের সমাহার এখানে রয়েছে। এই মিউজিয়াম অতিশয় সমৃদ্ধ; যারা এ ধরনের বিষয়বস্তু পছন্দ করেন, কল্পনায় অতীতে ফিরে যেতে চান, তাদের ভালো লাগবে এটি।
এখানে অতীতে ব্যবহৃত টার্কিশ বিখ্যাত কার্পেটের অনেক স্যাম্পল আছে, আরো আছে নানান আকর্ষণীয় জিনিস। যতখানি সম্ভব ছবি দিলাম, সেখান থেকে মোটামুটি একটা আইডিয়া আপনারা পাবেন।
মিউজিয়াম থেকে বেরিয়ে দেখি, হাতে বেশ সময় আছে। আমি আবার গালাতা ব্রীজের কাছে যেতে চাইলাম, কারন সেখানে একটা দোকান আছে যেটার আইটেমগুলি অনেক সুন্দর এবং আমার স্ত্রী সেখানকার একটা আংটি কিনতে বলেছেন, প্রথম যেদিন এসেছিলাম সেদিন ছবি তুলে পাঠিয়েছিলাম। ভিডিও দিলাম কমেন্টে, দেখতে পারবেন।
হাতে যে কয়টি লিরা আছে, তাতে আংটি হয় কিনা গিয়ে দেখা যায়। সেদিন গালাতা ব্রীজ দেখেছিলাম রাতে, আজ দেখলাম বিকেলে, বড় সুন্দর লাগলো এটি, মানুষজন বিরামহীনভাবে বড়শি বেয়েই যাচ্ছে, ছোট ছোট মাছ ধরেই যাচ্ছে, এ এমন এক নেশা।
সবুজ রঙের আংটি কিনে গালাতা ব্রীজ এরিয়া থেকে আমি চলে গেলাম স্পাইস বাজার; এটি আরেক বিখ্যাত বাজার, গ্র্যান্ড বাজার থেকে খুব দূরে নয়। স্পাইস বাজারের সাথেই আছে সুদৃশ্য স্পাইস বাজার জামে মসজিদ। আমি স্পাইস বাজারে প্রবেশ করলাম, দেখলাম এটি আসলে গ্র্যান্ড বাজার থেকে ভিন্ন কিছু নয়, কেবল এখানে নানান ধরনের স্পাইস আছে, গ্র্যান্ড বাজারে নেই, এই যা।
এসব জিনিস আগেও দেখেছি প্লাস পকেটে খুব বেশী লিরা নেই, অতএব এখান থেকে বেরোনো দরকার। আমি আছি এখন এমিনোনু অঞ্চলে, এটি সমুদ্র তীরবর্তী একটি বিখ্যাত ব্যবসায়িক অঞ্চল। মেহেদী আসবে ছয়টায়, আমরা এখানকার ঘাট থেকেই জাহাজে উঠব। ঠিক এ সময়ই রুস্তম পাশা মসজিদ থেকে মাগরিবের আযান ভেসে এলো; আমি মাগরিব পড়ার জন্য স্পাইস বাজারের মধ্য দিয়েই রুস্তম পাশা মসজিদের দিকে এগিয়ে চলিলাম।
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.