গুলহানে পার্ক থেকে সোজা চলে গেলাম ব্যাসিলিকা সিস্টার্ন-এ; এখানে টিকেট বিদেশীদের জন্য ১৯০ লিরা। এটা প্রায় সবারই টপ টেন লিস্টে আছে, ইন্টারনেটে ঢুকলেই রক্তিমাভ এক ছবি দেখা যায় যা সবাইকে আকর্ষণ করে; মনে হয় আগুনের লেলিহান শিখা চরম আক্রোশে অপেক্ষা করছে!
ভিতরে প্রবেশ করে তাজ্জব বনে গেলাম; কি জিনিস এটা?! বিশাল বড় ফাঁকা স্পেস, কেবল অসংখ্য পিলারের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেক উঁচু এই স্থাপনাটি। নীচের দিকে এক ফুট উচ্চতায় স্বচ্ছ পানি রয়েছে, সেই পানির নীচ থেকে নানান রঙের আলো ঠিকরে বেরোচ্ছে।
পুরো জায়গাটার পানির মধ্যে রয়েছে অজস্র কয়েন। আর এই পানির মধ্য দিয়ে চলে গেছে অনেকগুলো পাথুরে পথ। আর রক্তিমাভ আকার ধারণ করে যেটা, সেটা আসলে লাইটিং এর কারনে; ক্ষণে ক্ষণে এই রঙ বদলাতে থাকে।
আগেই পড়েছি, এখানে একটি পিলার আছে যেটার মাথায় একটা মূর্তি আছে এবং সেই মূর্তি নিচের দিকে উল্টো করে রাখা আছে; এতা আসলে গ্রীক দেবী মেডুসার মূর্তি যার মাথার চুলগুলো ছিল বিষাক্ত সাপ এবং মেডুসার চোখের দিকে যারা তাকাতো তারা সবাই পাথর হয়ে যেত! সে কারনেই কিনা জানি না, মেডুসাকে চিরস্থায়ী পাথর বানিয়ে রাখা হয়েছে এখানে!
যেটি অনুভব করলাম, এই জায়গা সম্বন্ধে আগে জানা দরকার! হায়, এটা সম্পর্কে জানানোর মত কাউকে আমি পেলাম না। যাকেই জিগ্যেস করি, সে-ই বলে জানি না।
জেনে যেহেতু আসিনি এটা কি, তাই অন্যের কাছ থেকেই আপাততঃ জানতে হবে। হটাৎ দেখলাম, এক বুড়ো গাইড ১৫/২০ জনের একটা দলকে বোঝাচ্ছে; চুরি করে শুনতে চাইলাম। খুব অল্প যা জানলাম, তাতে বোঝা গেল, এর মধ্যে আগেকার দিনের লোকেরা পানি ধরে রাখত!
এখানে উল্লেখ্য যে, এই সিস্টার্নটি ৯ মিটার মাটির নীচে অবস্থিত, অর্থাৎ আমরা সমতল থেকে এটি দেখবার জন্য নীচে নেমেছি। বিষয়টা আরেকটু ভালোভাবে জানা দরকার; সে জন্য গুগলের দ্বারস্থ হলাম!
এক টুকরো ইতিহাসঃ
ইস্তাম্বুল শহরের মাটির নীচে যে শত শত সিস্টার্ন বা কুন্ড আছে, ব্যাসিলিকা তার মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি আয়া সোফিয়া থেকে ৪৯০ ফুট দক্ষণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত এবং এটি খনন করা হয়েছিল ৬ষ্ঠ শতকে বাইজেন্টাইন শাসনামলে যখন সম্রাট ছিলেন প্রথম জাস্টিনিয়ান!
সম্রাট জাস্টিনিয়ান, নিকা যুদ্ধের মাধ্যমে কন্সটান্টিনোপল ধ্বংস হয়ে যাবার পর ৫৩২ সালে ইস্তাম্বুল শহর পুণর্নিমানের অংশ হিসেবে এই কুন্ডটি তৈরি করার নির্দেশ দেন। এটি দৈর্ঘে ১৩৮ মিটার এবং প্রস্থে ৬৫ মিটার এবং এতে ৮০ হাজার ঘনমিটার পানি ধরে রাখা যায়। এর ছাদটি ৩৩৬ টি মার্বেল পাথরের পিলারের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে।
ইস্তাম্বুল শহরের সবগুলি সিস্টার্ন বা কুন্ডই পানি ধরে রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো; ব্যাসিলিকা প্রথমে বাইজেন্টাইন সম্রাটদের ও পরে অটোমান সম্রাটদেরও পানি সাপ্লাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে পানির পরিমাণ কমিয়ে রেখে সেটি দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
এখানে একটি মিথ বা কুসংস্কার চালু আছে; তা হলো, এখানকার একটি পাথরে একটি ফুটো আছে, সেই ফুটোতে বুড়ো আংগুল রেখে বাকি আংগুলগুলো কবজি মোচড় দিয়ে ৩৬০ ডিগ্রি এংগেলে ঘুরিয়ে আনলে আপনার মনের আশা পুরণ হবে!
আরো একটি ব্যাপার এখানে ছিল; তা হলো, যেসব রাজা বাদশাহরা এই কুন্ডের পানি পান করতেন, কেউ যেন পানিতে বিষ মিশিয়ে তাদের হত্যা করতে না পারে, সেজন্য এর মধ্যে মাছ ছেড়ে রাখতেন, যদি দেখতেন মাছগুলো বেঁচে আছে, তাহলে নিশ্চিত হতেন, পানিতে কোন বিষ নেই!
এটি একটি মাস্ট ভিজিট প্লেস; কিভাবে মাটির নীচে এমন একটি পাথুরে স্ট্রাকচার তৈরি হয়েছে ৫৩২ সালের পরে, কিভাবে এতবড় পিলার তৈরি করা হয়েছে, কি ছিল তাদের পানি ধারণ প্রক্রিয়া, এসব দেখার মতো জিনিস বটে! জানা যায়, ৭০০০ দাসকে ব্যবহার করা হয়েছিল এই সিস্টার্ন বা কুন্ডটি তৈরিতে এবং সময় লেগেছিল ৩ বছর।
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.
Exosomes were first isolated from BCCs and M T cells priligy 30mg In most cases, your fish will be dead long before you even notice any outward symptoms