গুলহানে পার্ক – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২৪)

গুলহানে পার্ক - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২৪)
গুলহানে পার্ক - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২৪)
গুলহানে পার্ক - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২৪)

গুলহানে পার্ক আমার লিস্টে ছিল না, কিন্তু বাহির থেকে এর সৌন্দর্য দেখে এখানে যাবার স্থির সিদ্ধান্ত নিলাম! এটি ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যেটি পড়েছে এমিনোনু অঞ্চলে; এটি টপকাপি প্যালেসের সাথেই এবং মারমারা সাগরের পাড়ে। এটি ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে পুরাতন ও এক্সপেন্সিভ পাবলিক পার্ক, যার অপর নাম ‘হাউজ অফ ফ্লাওয়ার্স’!

এটি কেন কারো বাকেট লিস্টে ছিল না, সেই প্রশ্ন বারবার মনে উঁকিঝুঁকি মারতে লাগলো, যতই এই পার্কের ভিতরের দিকে যাচ্ছিলাম! অনিন্দ্যসুন্দর এই পার্ক; সব সিজনে ফুল না থাকলেও বছরের বিশেষ সময়ে এটি ফুলে ফুলে সাজানো থাকে। আমি যখন প্রবেশ করেছি, তখন শীতকাল শুরু হয়েছে, তবুও পাথুরে রাস্তার মাঝখানে সবুজ ঘাসগুলো আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল, যেন বিছানো গালিচা।

আয়তনে বিশাল এই পার্ক; পুরোটা কাভার করব কিনা ভাবছি, কারণ, ওদিকে ব্যাসিলিকা সিস্টার্ণ ৬ঃ০০ টায় বন্ধ হয়ে যাবে। আজকে ব্যাসিলিকা সিস্টার্ণ দেখে যেতে না পারলে আবার আসতে হবে এদিকে, এত সময় নেই। কিন্তু গুলহানে পার্কের সামনের দিকে তাকালে সেটি কেবলই টানে, এই টান উপেক্ষা করে পিছন ফিরে যাবার উপায় নেই।

হাঁটতে হাঁটতেই এখানে দেখলাম বেশ কিছু হাঁস চরে বেড়াচ্ছে। একটা ছোট সাইজের পার্কও আছে বাচ্চাদের খেলার জন্য। এদের রুচি দেখলাম এত উন্নত যে, একটি বেড়া তারা দিয়েছে, সেটাও ফুলের ছবিতে ভরা, হটাত দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি একটি অস্থায়ী বেড়া।

হটাত চোখে পড়ল একটি মোড়, দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে জায়গাটিকে; এটি না দেখে যাওয়া যায় না। সেখানে যেতেই দেখলাম, দূরে নীল সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। যাব্বাবা, এই সমুদ্র না দেখে কিভাবে যাই। হাঁটতে থাকলাম আর এই পার্কের নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম।

বারবারই মনে হচ্ছিল, আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়ামে না গিয়ে আমার এই গুলহানে পার্কে এসে ঘাপটি মেরে বসে থাকা দরকার ছিল; কিন্তু কেউ আমাকে এই পার্কের সন্ধান দেয়নি। যাই হোক, পুলিশকে জিগ্যেস করলাম, আমি একবার বের হলে আবার প্রবেশ করতে পারব কিনা; পুলিশ বলল, পারব। এখানকার পুলিশরা মোটামুটি ইংরেজি বোঝে এবং বলতেও পারে।

পিছনের গেট দিয়ে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সাগরের পাড়ে চলে গেলাম; আহা! কি সুন্দর নীল পানি, ক্রুজ শিপগুলি তরতর করে চলছে, গাংচিলগুলি সেই শিপগুলিকে এসকর্ট করে নিয়ে যাচ্ছে, বড় চোখজুড়ানো দৃশ্য।

বেশীক্ষণ অবস্থান করলাম না সেখানে, আবার পিছন গেট দিয়ে ঢুকে হাঁটতে লাগলাম। একরাশ ভালোলাগা নিয়ে প্রধান গেট পার হলাম; আজকের দিনের সেরা অর্জন এই গুলহানে পার্ক। আপনাদের জন্য মাস্ট ভিজিট প্লেস হিসেবে সাজেস্ট করে গেলাম!

2 thoughts on “গুলহানে পার্ক – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২৪)”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top