ব্লু মস্ক – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২২)

ব্লু মস্ক - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২২)
ব্লু মস্ক - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-২২)

৬ই ডিসেম্বর ট্রেনিং শেষ করে চলে গেলাম ব্লু মস্ক তথা সুলতান আহমেদ মসজিদ দেখতে। আসলে পরশুদিন আয়া সোফিয়ার উল্টোদিকে যে সুন্দর ও বড় সাইজের মসজিদটি দেখছিলাম, সেটাই ছিল এই ব্লু মস্ক; চিনতে পারিনি।

আজ এই ব্লু মস্ক দেখতেই আবার আয়া সোফিয়া চত্তরে এসেছি। অবশ্য উদ্দেশ্য কেবল একটিই নয়, সাথে আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়াম ও ব্যাসিলিকা সিস্টার্নও দেখার ইচ্ছে আছে।

ব্লু মস্ক আয়তনে বিশাল, সৌন্দর্যে চোখা ধাঁধানো এবং গৌরবে সীমাহীন। দীর্ঘদিন থেকে এটার রিপেয়ারমেন্ট এর কাজ চলছে; এর মধ্যেই দর্শণার্থীদের প্রবেশ করার অনুমতি মিলছে।

মসজিদ প্রাংগনের বাইরে এর মতই আরেকটি অতি সুন্দর স্থাপনা আছে, যেখানে সুলতান আহমেদ ও তাঁর আত্মীয়বর্গের সমাধিস্থল রয়েছে। সেটিরও রয়েছে চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য।

অনেকেই দেখলাম এখানে নামাজ পড়ছেন, মোনাজাত ধরছেন; তবে সেসব নিজেদের কল্যাণের জন্য নাকি সুলতান আহমেদ এর কল্যাণের জন্য তা বোঝা গেল না।

সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। মসজিদের অভ্যন্তরের দেওয়াল নীল রঙের টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত বলে এই মসজিদটি নীল মসজিদ নামে পরিচিত।

এক টুকরো ইতিহাসঃ

এটি ১৬০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৬১৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে উসমানীয় সম্রাজ্যের সুলতান আহমেদ বখতি নির্মাণ করেন। মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি মাদরাসা, একটি পান্থনিবাস এবং প্রতিষ্ঠাতার সমাধি অবস্থিত।

তুরস্ক সাতটি পাহাড়ে ঘেরা দেশ হওয়ায় একে সাত পাহাড়ের দেশ বলা হয়। তুরস্কে তিন হাজরের বেশি মসজিদ রয়েছে। এটি তুরস্কে অবস্থিত ছয় মিনার ওয়ালা একমাত্র মসজিদ। যদিও বর্তমানে এটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তথাপি এটি ইস্তানবুলের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ।

সুলতান আহমেদ তথা প্রথম-আহমেদ ১৬০৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৬১৭ খ্রিষ্টাব্দে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান ছিলেন। আহমেদের শাসনামল রাজকীয় ফ্র্যাটিট্রিকের অটোমান ঐতিহ্যের সমাপ্তির জন্য উল্লেখযোগ্য।

তখন থেকে অটোমান শাসকরা সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর আর তাদের ভাইদের হত্যা না করার আইন চালু হয়। তূর্কিতে নির্মিত বিখ্যাত মসজিদগুলোর মধ্যে তার নির্মিত নীল মসজিদ ছিল অন্যতম, যার ফলে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন।

অটোমান সাম্রাজ্যের অন্যতম ক্ষমতাসীন নারী কোসেম সুলতান তার স্ত্রী ছিলেন। সুলতান আহমেদ তার সমসাময়িক সুলতানদের মধ্যে অধিকতর যোগ্য ছিলেন। তিনি খুব অল্প বয়সে সিংহাসনে আরোহন করেছিলেন এবং মাত্র ২৭ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top