র‍্যাডিসন ব্লু – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৮)

র‍্যাডিসন ব্লু - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৮)
র‍্যাডিসন ব্লু - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৮)

এখানে এখন ভোর হয় ৮ঃ১৫ তে! যেহেতু প্রায় সব অফিস সকাল নয়টায় শুরু হয়, তাই এখানে রাত থাকতেই অনেকে বেরিয়ে পড়ে! ডিসেম্বরের ৫ তারিখ অর্থাৎ ইস্তাম্বুলে আমার তৃতীয় দিন সকালে হোটেল ফেভরিতে নাস্তা খেয়ে ট্রেনিং সেন্টার র‍্যাডিসন ব্লু এর দিকে হাঁটা দিলাম।

রাস্তা মোটামুটি কালকে চিনে গেছি, কাউকে আর জিগ্যেস করতে হলো না। ১০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে গেলাম ট্রেনিং সেন্টারে; গতকাল আমার নির্ধারিত ট্রেইনার এক্সিডেন্ট করার কারনে আসতে পারেননি, আজকে আমার জন্য নতুন ট্রেইনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ক্লাসরুমের কাছাকাছি যেতেই এক বিপুল ভুঁড়িওয়ালা লম্বা গড়নের লোক আমার দিকে এগিয়ে এলো; এসে নিজের পরিচয় দিলো, কাছেই ছিল আবদেল লতিফ, সে পরিচয় করিয়ে দিল, এই ভুঁড়িওয়ালাই আমার ট্রেইনার!

একসাথে বাইরে চা পান করে আমরা ক্লাসে ঢুকলাম; আমি যেহেতু বাংলাদেশ থেকে গেছি, তাই এখানে অন্যান্য পতাকার সাথে বাংলাদেশের পতাকা আছে; বিষয়টা ভালো লেগেছে। ট্রেনিং রুমের আয়োজন খুব চমৎকার; নীচে ভারি কার্পেট, সাইডে এমন সিস্টেম করা যাতে বাইরের শব্দ না আসে।

সিসলি’র র‍্যাডিসন-ব্লু এই ফ্লোরটাকে ডিজাইন করেছে এভাবেই যে, এখানে সব রুম ট্রেনিং-এ ব্যবহৃত হয় এবং অনেক প্রতিষ্ঠান এগুলো ভাড়া নেয়। এর সাথে বাফেট (বুফে এবং বাফেট দুটিই সঠিক উচ্চারণ!) লাঞ্চের প্যাকেজ আছে।

আমার ট্রেইনারের নাম ইমাদ ফাওজি, অত্যন্ত চমৎকার মানুষ, একেবারে আসর জমানো ক্যারেক্টার। তিনি জর্ডানের অধিবাসী। বেশীরভাগ সময় এখানে থাকেন এবং এরকম প্রোগ্রাম করেন। চমৎকার ইংরেজি বলেন তিনি, কেবল কন্ঠটা একটু ফ্যাঁশফ্যাঁশে; ৯০-৯৫% কথা বোঝা যায়।

এই প্রথম কোন লোককে দেখলাম, তার ভুঁড়িকে মাউসপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করতে! বললাম, তোমার একটা ছবি তুলি? বলল, তুমি বরং ভিডিওই করো! অতি উৎসাহে সে অভিনয় করে গেল। নানান গল্পে আমাদের সময় যখন পেরিয়ে গিয়ে একটা বাজলো, সে বলল, চলো লাঞ্চ করি।

লাঞ্চ করতে গিয়ে দেখি, এলাহি কান্ড! এত খাবার গুনে শেষ করা যাবে না। ইমাদ ফাওজি’র ভুঁড়ির রহস্য কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পাওয়া গেল; সে মোটামুটি নিতে নিতে চার প্লেট ভরে বিভিন্ন রকমের আইটেম নিয়ে বসেছে!

আমি তার শিষ্য প্লাস আমার ভুড়িওতো কম নয়, তাছাড়া বাংলাদেশের মান-ইজ্জত বলেও একটা ব্যাপার আছে, আমি মোটামুটি তিন প্লেট ভরে বসলাম! খাওয়ার পর ঘুরতে যাবার প্ল্যান ছিল, কিন্তু এত বেশী খেয়ে ফেলেছি যে ট্রেইনারের সাথে বসে, আর নড়তে পারছিলাম না!

1 thought on “র‍্যাডিসন ব্লু – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৮)”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top