কিচেন থেকে আর্মারি – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)

কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)
কিচেন থেকে আর্মারি - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-১৫)

আমি দুটি মারাত্মক ভুল করেছি; এক, ইস্তাম্বুল আসার আগে আমি যথেষ্ট স্টাডি করে আসিনি এবং একটি ভালো ক্যামেরা আনিনি! ইস্তাম্বুল কোন যদু-মধু শহর নয়; এটি শক্তিশালী ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্বলিত, বিশ্ব ইতিহাসে যার সরব অবস্থান রয়েছে। আর এর যে সৌন্দর্য তা ধারণ করার জন্য আমার শাওমি এমআই ম্যাক্স থ্রি মোবাইলের ক্যামেরা মোটেও যথেষ্ট নয়!

জ্ঞানের অভাবটুকু ঘুচানো যেত যদি লোকজন ফ্রিকুয়েন্টলি এন্ড ফ্লুয়েন্টলি ইংরেজি বলতে পারত! এখানে আসার আগে আমি কেবল সেরা সেরা স্পটগুলোর তালিকা করেছি, সেগুলোর ডিস্ট্যান্স দেখেছি এবং ভিডিওতে সেগুলোর বাহারি সৌন্দর্য দেখেছি। কিন্তু প্রত্যেকটা জিনিস দেখার সময় যে এর ইতিহাসটা জানার দরকার ছিল, সেটা মাথায় আসেনি; সময়ও পাইনি। এদিকে না দেখেছি সুলতান সুলেমান, না দেখেছি দিরিলিস আর্তুগ্রুল কিংবা কুরুলুস ওসমান; রয়ে গেছি অজ্ঞতার তিমিরেই।

এখন এখানে বসে গুগল থেকে দেখব, সে সময়ও নেই; প্রতিটি মিনিট আমি কাজে লাগাচ্ছি। যাই হোক, আফসোস করা বাদ দিয়ে পুলিশের ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী আবার মূল ফটকের কাছাকাছি এসে হাতের বামে গেলাম; বিশাল এক ডাইনিং এবং কিচেনের সন্ধান পাওয়া গেল। এখানে সুন্দর করে সাজানো রয়েছে সেই সময় সুলতান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত নানান জিনিসপত্র। কিচেনে রয়েছে বহুসংখ্যক বড় বড় রান্নার পাতিল; অসংখ্য কক্ষ রয়েছে এখানে, সবগুলো খোলাও নেই, সব মিলিয়ে এখানে ৩/৪টি কক্ষ দর্শণার্থীদের জন্য খোলা হয়।

কিচেন থেকে গেলাম আর্মারিতে; এখানে রয়েছে অটোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন সুলতানের সময়ে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র! সেখান থেকে গেলাম হারেমে; এ এক এলাহি কান্ড! যারা টপকাপি মিউজিয়ামে যাবেন, তাদের জন্য হারেমে যাওয়া মাস্ট! এটি আয়তনে বিশাল, নির্মাণশৈলিতে অতুলনীয়; এখানে সুলতানদের বাসস্থান, সভাকক্ষ, নামাজের স্থান, রাজাদের গোসলখানা, রানীদের গোসলখানসহ টোটাল প্যাকেজ। বাথরুমগুলোর উপরের দিকের ছাদ বিশেষ আকৃতিতে ফাঁকা রাখা হয়েছে যাতে করে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে এবং তা আদ্রতা মেইনটেইন করতে পারে।

সবচেয়ে আশ্চর্যের, সেই সময়ে তারা গরম ও ঠান্ডা উভয় ধরনের পানির ব্যবস্থা করেছিলেন; এই তথ্যটুকু জেনেছিলাম চুরি করে, পাশের টিমের গাইড যখন এগুলো বলছিলেন তখন জেনেছি। তিনি খুব সুন্দর করে ইংরেজিতে বর্ণনা করছিলেন। রাণীদের গোসলখানাগুলো সোনালী রঙের লোহার বেড়া দিয়ে আবৃত থাকতো আর থাকতো বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বলা তো যেত না, কে কখন কাকে ছুরি মারত!

হারেমের পানি নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ছিল; যেহেতু এটি পাহাড়ি ঢালে অবস্থিত, ফলে পানি সহজেই গড়িয়ে পড়ত, কিন্তু এটি প্রবাহিত হতো একটি বিশেষ পন্থায়, সেটি তারা ডেভেলপ করেছিল।

হারেম থেকে বেরিয়ে দেখলাম দুইঘন্টা আগে যে লাইনটি ছিল সেটি এখনো আছে। এর নিশ্চয়ই কোন বিশেষত্ব আছে, নইলে লোকে লাইন দিয়ে এটি দেখবে কেন যেখানে গোটা প্রাসাদের আয়তন বিশাল এবং ফাঁকা! আমার মোটামুটি সব দেখা হয়ে গেছে; ফলে এটির লাইনে দাঁড়িয়ে গেলাম, ততোক্ষণে প্রায় সাড়ে চারটা বাজে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top