তোপকাপিতে গাইড যে একজন দরকার, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম; তবু সাগরের পাড় থেকে আরো সামনে এগোলাম, একইরকম একাধিক স্থাপনা পেলাম; এগুলো গোলাকৃতির বিল্ডিং, বসার জন্য লম্বা সোফা আছে দেখতে বিছানার মত, উপরে যথারীতি মিনার আছে যার ভিতরের দিকটা নানান কারুকার্যে খচিত।
ইস্তাম্বুলের সমস্ত এমন স্থাপনাগুলোতে সুদৃশ্য মিনার আছে এবং ভিতরে নানান রঙের কারুকার্য আছে। এটি মুসলিম সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে সব জায়গায় গর্বে অবস্থান করছে। এমন দুই তিনটি স্থাপনা দেখার পর এক পুলিশ অফিসারকে পেলাম। তাকে জিগ্যেস করলাম, হারেম কোথায় এবং আরো জিগ্যেস করলাম আর কি কি এখানে দেখার আছে?
সুন্দর করে উত্তর দিল; এই প্রথম বুঝলাম, আমি মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই ডানে বামে যে দুটি স্থাপনা ছিল তার একটি হচ্ছে রাজা বাদশাহদের কিচেন ও ডাইনিং এবং অন্যটি আর্মারি বা অস্ত্রশস্ত্রের প্রদর্শণী! এমনকি সে আমাকে হারেম কোনদিকে সেটিও দেখিয়ে দিল।
এক টুকরো ইতিহাসঃ
তোপকাপি প্যালেস তুরস্কের ইস্তানবুল শহরে অবস্থিত একটি রাজকীয় প্রাসাদ। দ্বিতীয় মুহাম্মদ পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই প্রাসাদের নির্মাণকাজ শুরু করান। এই প্রাসাদ প্রায় ৪০০ বছর (১৪৬৫ – ১৮৫৬) ধরে উসমানীয় সুলতানদের বাসস্থান হিসেবে বিদ্যমান থাকে।
এই প্রসাদটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান এবং রাজকীয় বিনোদনস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল তবে বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে রয়েছে মুসলমানদের জন্য পবিত্র স্মরণচিহ্ন যেমন হযরত মোহাম্মদ এর আলখাল্লা এবং তরবারি।
তোপকাপি প্রাসাদ “ইস্তানবুলের ঐতিহাসিক এলাকা”র অন্তর্ভুক্ত যা ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
বাইজেন্টাইন কনস্টান্টিনোপল জয়ী সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের নির্দেশে স্থাপনাটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দে। চারটি মূল চত্বর এবং অনেক ছোট ছোট ভবন নিয়ে এই জটিল প্রাসাদটি গড়ে তোলা হয়েছে। রাজকীয় বাসস্থান হিসেবে এর গুরুত্ব উঁচুতে হলেও প্রাসাদে প্রায় ৪,০০০ লোকের বাসস্থান ছিল যা পূর্বে একটি বিশাল তীরবর্তী এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ছিল।
পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে ১৫০৯ সালের ভূমিকম্প এবং ১৬৬৫ সালের অগ্নিকান্ডের পরে বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে প্রসাদ চত্বরটির সম্প্রসারণ করা হয়। প্রাসাদে মসজিদ, একটি হাসপাতাল, কয়েকটি বেকারি বা রুটিঘর এবং একটি টাঁকশাল রয়েছে।
তোপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরটির বর্তমানে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। প্রাসাদ চত্বরে কয়েক’শ ঘর এবং প্রকোষ্ঠ রয়েছে, তবে জনসাধারণের দর্শনের জন্য এখন শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ঘরগুলোতেই প্রবেশাধিকার রয়েছে।
চত্বরটিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী ছাড়াও তুর্কি সেনাবাহিনীর সশস্ত্র কর্মীদের পাহারায় মোতায়েন রয়েছে। প্রাসাদে উসমানীয় স্থাপত্যকলার বহু উদাহরণসহ বিপুল সংখ্যক চীনা মাটির বাসন, পোশাক, অস্ত্র, ঢাল, বর্ম-আবরণ, ইসলামিক ক্যালিগ্রাফিক হস্তলিপির সংগ্রহ রয়েছে সেই সাথে উসমানীয় বিভিন্ন মূল্যবান ধন ও রত্ন প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Your enticle helped me a lot, is there any more related content? Thanks!
Can you be more specific about the content of your article? After reading it, I still have some doubts. Hope you can help me.