তুরস্কের খাবার দাবার – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৬)

তুরস্কের খাবার দাবার - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৬)
তুরস্কের খাবার দাবার - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৬)
তুরস্কের খাবার দাবার - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৬)

তুরষ্ক খাবার দাবারের জন্য বিখ্যাত, এখানকার মিষ্টান্ন আইটেমের স্বাদ অন্য লেভেলের! আমাদের দেশের অধুনা বাফেট রেস্টুরেন্টগুলোতে যেসব মিষ্টান্ন দেখা যায়, তার সবই এখানে দোকানের পর দোকানে ঝলমলে আলোয় পথচারীদের স্যালাইভা সিক্রিট করাতে থাকে।

এমনকি হালের বাক্লাভা, যেটি বিভিন্ন বড় বড় রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়, এটিও এখানে এভেইলেবল; ইস্তাম্বুল গিয়ে বাক্লাভা কিনে না আনা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। আমার ধারণা, আমাদের রেস্টুরেন্টে এই মেন্যুগুলো এখানে থেকেই গেছে; উল্টটাও বিচিত্র নয়!

তবে মিষ্টান্ন ছাড়া অন্যান্য আইটেম খেতে গেলে, সতর্ক থাকতে হবে; এরা যে কোন কিছুতেই টক মেশায়; টক এদের বড় প্রিয়। এই টক আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য খাবারটাই নষ্ট করে দেয়।

এখানে যত সালাদ পাওয়া যায় ১০০% সালাদে টক আছে। আমার বাফেট ব্রেকফাস্ট ছিল হোটেলে এবং দুপুরের বাফেট লাঞ্চ ছিল র‍্যাডিসন ব্লু তে। এখানকার কোন সালাদ আমি খেতে পারিনি। মন্দের ভালো হিসেবে প্রতিদিন ভুট্রার একটা আইটেম নিয়েছি; কাঁচা ভুট্রার সাথে টমেটো এবং মাশরুম ফ্রাই। এখানে টমেটোর ব্যবহার অত্যধিক।

একটা সুবিধা আছে, খাবার হালাল নাকি হারাম, এটা নিয়ে টেনশন করতে হয় না; গোস্ত বলতে এখানে আছে কেবল মুরগী আর গরু, আর আছে সামুদ্রিক মাছ। রান্না এদের নিজেদের মত, আমার খুব একটা ভালো লাগেনি, তবে এরা খুব মজা করে খায়।

এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ডোনের, যেটা আসলে আমাদের দেশের শর্মা, পার্থক্য হলো, এখানে চোখের পলকেই শর্মার ভিতরে টক আইটেম ঢুকিয়ে দিবে এবং এটাকে নষ্ট করে দিবে; টকের কারনে কাবাবের স্বাদটা পাওয়া যায় না।

ঝাল খাবার নেইই বলতে গেলে, গরুর গোস্তের কারি খেতে গেলে মনে হবে এক ফোটাও মরিচ দেয়নাই। এখানকার তরি-তরকারির দোকান দেখলাম, মোটামুটি অনেককিছুই পাওয়া যায়, ফুলকপির সাইজ বিরাট বড়, অনেকটা মিষ্টি কুমড়ার মত আর কাচামরিচ তো একেকটা ৮-৯ ইঞ্চি লম্বা!

ফল এখানে অত্যধিক প্রচলিত। নানান ধরনের ফল রয়েছে; তবে, টকের ভয়ে আপেল ছাড়া আর কিছু কিনিনি। আমি ব্রেকফাস্টে প্রথমদিন ভুল করেছি, এরপর থেকে আর না। আমি জানি, আমাকে কি নিতে হবে। ভুট্রা আর মাশরুমের উপর দিয়ে গেছি। চার পাঁচ রকমের স্যুপ থাকার পরেও হাত দেইনি টকের ভয়ে।

এখানকার ভাতগুলো আঠালো হয়, অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। হোটেলের ভাতগুলিতে লবণ ও অন্যন্য আইটেম মেশায় ফলে তার অফ হোয়াইট কালার ধারণ করে; এখানে ভাতে লবণ দেয় কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে লবণ দেয় না। অনেক টাকা দিয়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিনে তাই বিস্বাদ এই ফ্রেঞ্চ ফ্রাই টাকার মায়ায় কামড়ে যেতে হয়!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top