![তুর্কিশ ভাষা - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৫) 1 তুর্কিশ ভাষা - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৫)](https://shaheenstravelstory.com/wp-content/uploads/2023/09/318494754_5803993916329490_6467000926500244317_n-1.jpg)
এরা তুর্কিশ ছাড়া অন্য যে কোন ভাষা ঘৃণা করে; ভাষা এখানে একটা বিরাট সমস্যা। আমার অভিজ্ঞতা বলে, মাত্র ২% লোক কাজ চালানোর মত ইংরেজি জানে। বাকিরা টুকটাক ইংরেজি জানলেও বলে না বা বলতে চায় না। সিরিয়ান যুবক নূর আল মোহশেয়া এর মতে, এখানকার অনেক লোকজন ১০০% তুর্কিশ উচ্চারণ করতে না পারলে কারো সাথে কথা বলে না!
কেউ ইংরেজিতে কিছু জিগ্যেস করলে এদের ৫০% লোক তা এড়িয়ে যায়। আমি ২০০৫ এ চীনের কুনমিং-এ একটা ট্রেনিং এ গিয়েছিলাম, সেখানে একটা চার তারকা হোটেলে ছিলাম, সেই হোটেলের ডাইনিং-এ একজন মহিলা ছিল, যিনি সকালে গেলেও বলতেন গুড মর্নিং, দুপুরেও গুড মর্নিং এমনকি রাতেও গুড মর্নিং; এদের অবস্থা এর চেয়েও খারাপ!
অত্যন্ত ব্রাইট চেহারার লোক, দেখলেই মনে হবে উচ্চশিক্ষিত এবং বড় চাকরি করে, কিন্তু ছোটখাটো ইংরেজি জিগ্যেস করলেই পড়ি কি মরি করে এড়িয়ে যায়। আমার ট্রেইনার বললেন, এদের কারিকুলামে ইংরেজি ছিল না, রিসেন্টলি এটা এড করা হয়েছে, ভবিষ্যতে হয়ত এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে; তবে আমার মনে হয়েছে, প্রবল জাতিসত্তা এটিকে দীর্ঘায়িত করবে।
এই ভাষাগত সমস্যার কারনে আমি মেট্রোতে চড়তে গিয়ে এক স্টেশনে না নেমে পরের স্টেশনে নেমে হেঁটে এসেছি। আবার গত পরশু তো হরিবল এক্সপেরিয়েন্স হলো; আমি সুলতান আহমেদ থেকে সুলেমানিয়া মসজিদে যাব, চারবার ট্রাম বদলানোর পরও সেখানে যেতে পারলাম না; এক মাথা থেকে আরেক মাথায় সাফা-মারওয়া করলাম, গেটম্যান বলে এক কথা, পথচারী বলে আরেক কথা, আমি বুঝিনাই কারো কথাই! হেঁটে যাওয়া যেত কিন্তু সেদিন হাঁটার মত শক্তি শরীরে ছিল না। পরে গুগল ম্যাপ দেখে কোনরকমে হোটেলে ফিরেছি।
আমার ট্রেইনার বললেন, এরা আরবী ভাষাও পছন্দ করে না, যদিও সীমান্তের দিকের লোকেরা আরবী ব্যবহার করে এবং খুব ভালো পারে। এই দেশে দেখলাম কিছুসংখ্যক সিরিয়ান, জর্ডানী এবং লেবানিজও বাস করে এবং আফগান আর বাংলাদেশীও পেয়েছি কিছু। তবে কথা একটাই, এখানে সম্মান পেতে হলে জেনুইন তুর্কিশে কথা বলতে হবে, নইলে আপনি এই দলভূক্ত না। সিলেটের লোকজন যেমন অন্য জেলার লোকদের বলে আবাদী, এখানেও অন্য জাতির লোকদের একটা বিশেষ নামে ডাকা হয়, নামটা ভুলে গেছি।
তবে দেখলাম, এখানে অন্যান্য দেশের লোকজনের ইংরেজি খুব ভালো। আবার দোকানপাটে যেখানে ট্যুরিস্টের আগমণ বেশী সেখানকার লোকেরা টুকটাক জানে। ইস্তাম্বুল ইউনিভার্সিটির সামনে এক লোককে জিগ্যেস করলাম, গেট কোথায়? এই লোক গেট কি বোঝে না। পরে বললাম, এন্ট্রেন্স, এরপর বললাম, ওপেনিং! এতে ঐ লোক ঘাবড়ে গিয়ে দুই তরুণীকে দাঁড় করালো, তারাও বোঝে না! শেষমেষ হাতের ইশারায় বোঝাতে সামর্থ্য হলাম এবং তারাও ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে দিল, গেট সামনেই।
প্রশ্ন হলো, এরা ইংরেজি শিখছে না কেন? উত্তর, শেখার দরকার নেই। এটা এমন এক শহর, এখানকার লোকজন বোবা হলেও ট্যুরিস্টরা আসতেই থাকবে। এটাই তাদেরকে একগুঁয়ে করে রেখেছে। বড় বড় হোটেলের নাম ফুল তুর্কিশে, এক বর্ণ ইংরেজি নেই। ট্রামের মধ্যে প্রত্যেকটা স্পটের নাম তুর্কিশে, বোঝা মুশকিল কোথায় আছি আর কোথায় যাচ্ছি!
Thank you for your sharing. I am worried that I lack creative ideas. It is your article that makes me full of hope. Thank you. But, I have a question, can you help me?