প্রাণের শহর – (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৩)

প্রাণের শহর - (ইস্তাম্বুলের অভিযাত্রী-৩)

ইস্তাম্বুল একটি আলোর শহর, এটি একটি প্রাণের শহর, এটি একটি প্রেমের শহর! শহরের আয়তন খুব বেশী বড় মনে হয়নি কিন্তু যতদূর চোখ যাবে কেবল আলো আর আলো!

এখানে রাত্রিবেলা কেবল আলোর খেলা চলে; রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে দোকানপাট, মসজিদ, ব্রীজ, ক্রুজ শিপ সমস্তই রঙ বেরঙ এর আলোয় উদ্ভাসিত থাকে।

মসজিদগুলোতে ঝাড়বাতির সংখ্যাধিক্য দেখা যায়। মসজিদসহ প্রায় সব বড় বড় স্থাপনায় গোলাকার মিনার একটি অতি আবশ্যকীয় ব্যাপার এবং ভিতরের অংশে তা নানান কারুকার্যে খচিত থাকে।

এই ধরনের প্রায় সব স্থাপনাতেই গেইটের শুরুতে এবং এমনকি ভিতরেও ক্যালিগ্রাফিক ফন্টে কালেমা লেখা থাকে। সব মসজিদেই অতি সুদৃশ্য, আরামদায়ক কার্পেট থাকে।

এখানে মসজিদে জুতা রাখার সিস্টেম খুব সুন্দর; ভিতরে ওয়াল ধরে লম্বা কাঠের তাক বসানো থাকে আর বাক্স করে দেয়া আছে এবং সেসব বাক্সের নাম্বার আছে। আপনাকে জুতা রেখে কেবল নাম্বার মনে রাখতে হবে; নাম্বার ভুলে গেলে কিন্তু বিপদ!

আরেকটি বিষয় দেখেছি, অনেক মসজিদেই ‘শন’ বা জুতা পরার জন্য যে প্লাস্টিকের বা পিতলের বাকানো পাতটি দোকানদাররা ব্যবহার করে, সেটি থাকে। তাকসিম স্কয়ার মসজিদে তো এটি ছাতার ডান্ডার মত লম্বা যাতে লোকেরা দাঁড়িয়েই জুতা পরতে পারে; এই সিস্টেমটি আমার খুব ভালো লেগেছে।

এখানে সব মসজিদেই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারে, তবে যখন নামাজের সময় হয়, তখন প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে এবং যারা নামাজ পড়বে কেবল তারাই ব্যারিকেডের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে।

কোন খোলামেলা পোশাক পরে এখানে কেউ মসজিদে প্রবেশ করতে পারে না। এখন এমনিতেই শীত শুরু হয়েছ, তাই খোলামেলা পোশাকের সুযোগ নেই, তবে অন্য সময়েও এটি রেস্ট্রিকটেড।

যেখানেই মসজিদ আছে, সেখানেই চমৎকার অযুখানা ও টয়লেট আছে। ট্যুরিস্ট অধ্যুষিত বলেই কিনা জানি না, এগুলি সবসময় ঝকঝকে তকতকে রাখা হয়।

এরা বড় সৌন্দর্যপ্রিয় জাতি; রস্তাঘাটগুলো অতি ঝকঝকে না হলেও পরিষ্কার এবং উল্লেখযোগ্য, এখানকার বাতাসে কোন ধুলাবালি নেই! এখানে টানা দুই তিনদিন রাস্তায় হাঁটলেও মাথার চুল ঝরঝরে থাকে যেটি বাংলাদেশে কল্পনাও করা যায় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top