বাতাসিয়া লুপের হাতছানিটা ছিলই, সাথে রক গার্ডেনের স্বপ্নীল স্মৃতিতো এখনো তাজা; সেই আকাঙ্ক্ষায় ভর করে গাড়িতে উঠে পড়লাম, গাড়ি ছুটে চলল বাতাসিয়া লুপের দিকে। হায়! এ কি অবস্থা! ফুলগুলো সব ঝরে গেছে! স্ত্রী ফুল পছন্দ করেন; ওনাকে বলেছিলাম, বাতাসিয়া লুপ ফুলে বোঝাই থাকে! কিন্তু এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত ফুল টিকবে না, এটা আমি কিভাবে জানব? আমি তো ২০০১ এ এসেছিলাম এপ্রিলের প্রথম সপ্তায়।
ফুল মোটামুটি ৯০% ঝরে গেছে; ১০% যায় যায় করছে, তাতে অবশ্য স্ত্রীকে বোঝানো গেল যে, এভাবেই ফুলগুলো এখানে ফুটে থাকে। আজ এখানে প্রচুর মেঘ, সাথে প্রচন্ড বাতাস। মাঝে মাঝে অবশ্য মেঘ সরে গিয়ে একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, আবার মেঘেদের দল এসে সব আধার করে দিচ্ছে। হালকা বৃষ্টিও পেলাম; আমি কোথাও যাব আর সেখানে মেঘ-বৃষ্টি আসবে না, তা হতে পারে না, মেঘ-বৃষ্টি আমার ভালোবাসা।
রক গার্ডেন অনেক নীচ একতা স্থাপনা বা পার্ক। কিন্তু সেখানে প্রবেশ করে আবার সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উঁচুতে ওঠা যায়। অত্যন্ত পরিকল্পনা করে এটি বানানো হয়েছে; এটি একটি মাস্ট ভিজিট প্লেস। একটি ঝর্ণার ফোয়ারা নানান ক্যাসকেড আকারে নেমে আসছে। মানুষজন নানান ভঙ্গিতে ছবি তুলে এখানকার স্মৃতি ধরে রাখতে চাইছে। একটি চত্তর করা হয়েছে এখানে, খুব সুন্দর দেখতে। সব মিলিয়ে সারাদিনের ভীষণ ভালোলাগা নিয়ে হোটেলে ফিরে লাঞ্চ সারলাম বিকে ৪ঃ৩০ এ। এরপর সন্ধ্যায় বের হলাম মল রোড দেখতে, ভারতীয়রা অবশ্য এটাকে বলে ম্যাল রোড।
মল রোডের দোকানগুলি আহামরি কিছু না; আমাদের নিউমার্কেটের নীচতলার (ব্রীজের গোড়া থেকে যেটা শুরু হয়েছে) রোডের মত একটা রোড, দুই পাশে সাধারণ মানের দোকান, মূলতঃ শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। ইতস্ততঃ হাঁটছি, ফাঁকে কফি, জিলাপি আর সিংগাড়া নিলাম আমরা। তবে ভালো লাগলো মল চত্তর, রাত হয়ে গেছে বলে ভালোভাবে দেখতে পারলাম না, তবে বুঝলাম এটা একটা ভালোলাগার জায়গা হবে; সকালে আবার দেখব এমন প্রত্যয় নিয়ে হোটেলে ফিরে গেলাম।
আজ সিক্কিমের রাজধানী গ্যাংটক যাবার কথা। আমাদের টিমের বাকি সদস্যদের কিছু দূর্ঘটনার কারনে রওনা দিতে দেরি হবে; সেই ফাঁকে আবার মল রোড ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত হলো, হেঁটে যেতে মাত্র ৭/৮ মিনিট লাগে। ছোট ছেলের জন্য একটা জ্যাকেট কিনলাম, আমার স্ত্রী কিছু চা কিনলেন একটা চেইন শপ থেকে। এই চেইন শপের পাশেই মল চত্তর; খুব সুন্দর এবং পরিপাটি জায়গাটি। এখানে বাচ্চাদের ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা আছে; চার রাউন্ড ১০০ রুপি। আছে একটি স্টেজ, নিশ্চয়ই নাচ, গান বা আলোচনা সভা হয় এখানে। চত্তরের পাশেই বেঞ্চি আছে, যেখানে বসে মানুষজন দূরের পাহাড় আর ঘরবাড়ি দেখে। এটা একটা জমজমাটা জায়গা; দার্জিলিং এলে এখানে অবশ্যই খানিক সময় ব্যয় করে যাবেন।
Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.