ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি – ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া – কুমিল্লা দর্শন ২ 

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি – War Cemetery Comilla

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি: কুমিল্লার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, ওয়ার সিমেট্রি! এটি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে সিলেট তথা ব্রাহ্মনবাড়িয়া রোড ধরে সামান্য একটু এগোলেই দেখতে পাওয়া যায়। পরিতাপের বিষয়, বাংলাদেশে অবস্থিত দুটি ওয়ার সিমেট্রির মধ্যে চট্রগ্রামেরটা দেখলেও কুমিল্লারটায় আগে যাওয়া হয়নি।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান:

ইংরেজ কবরস্থান কুমিল্লা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ভারতীয়সহ বিভিন্ন দেশের নিহত সৈনিকদের কবর এখানে আছে। এই সমাধিক্ষেত্রটি Commonwealth War Graves Commission (CWGC) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ও তারাই এই সমাধিক্ষেত্র পরিচালনা করেন। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সকল ধর্মের ধর্মগুরুদের সমন্বয়ে এখানে একটি বার্ষিক প্রার্থণাসভা অনুষ্ঠিত হয়।

ইংরেজ কবরস্থান কুমিল্লা
ইংরেজ কবরস্থান কুমিল্লা

৮’শ থেকে ১২’শ শতকের মধ্যে স্থাপিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হলো কুমিল্লার ময়নামতি রাণীর প্রাসাদ; যদিও রাণীর প্রাসাদ নামটি হয়েছে ১৯’শ শতকে! অসম্ভব সুন্দর এ জায়গাটি সম্ভবতঃ সবচেয়ে অবহেলিত একটি বিহার।

ঈদের দিন যথেষ্টসংখ্যক লোক সমাগম হয়েছিল এখানে; এটি কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রি থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে হাতের ডানে পড়েছে। সমতল থেকে বেশ খানিকটা উঁচুতে এর অবস্থান; সংখ্যার হিসেবে ১৫.৪ মিটার। 

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি
ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি

কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলি যেহেতু প্রত্যেকটা কাছাকাছি, তাই এখানে ডে-ট্যুরে এলে এই জায়গাটি একবার দেখে যাবার অনুরোধ রইল। প্রায় ১০ একর জায়গা নিয়ে এটি স্থাপিত; পুরাকীর্তি হিসেবে ইতোমধ্যেই এটি স্থান করে নিয়েছে। পোড়ামাটির স্থাপনা আর সবুজের সমারোহ, সহজেই আপনাকে দিবে এক ভিন্ন অনুভূতি।

ধর্মসাগর ও রাণীর কুঠি

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী পর্যটন স্পটগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ধর্মসাগর ও তার পাড়ে অবস্থিত রাণীর কুঠি। ঈদের দিন রূপসাগর, ওয়ার সিমেট্রি ও রাণীর প্রাসাদ হয়ে ধর্মসাগর পাড়ে যাবার সিদ্ধান্ত হলো; সেই মোতাবেক মাগরিবের সময় গিয়ে পৌঁছলাম ধর্মসাগরের পাড়ে।

ঈদের দিন সন্ধ্যায় উপচে পড়া ভীড় ছিল ধর্মসাগর পাড়ে। ধর্মসাগরের শেষ মাথায় যে স্ন্যাকসের দোকানগুলি আছে, সেখানে বসার কোন জায়গা না পেয়ে আরো ভিতরের দিকে গিয়ে পার্কের এক পাশে একটু বসার জায়গা পেয়েছিলাম; সাথে ছিল পরিবারের আরো ছয়জন লোক। 

এখানে এখন একটি ছোট পরিসরে থিম পার্ক করা হয়েছে; বেশ কিছু রাইডও আছে, বাচ্চারা উচ্ছ্বাস নিয়ে সেগুলোতে চড়ছিল। এখানকার প্রধান খাবার ফুচকা; ফুচকা খাওয়া একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে এখন।

যাত্রা মাধ্যমঢাকা থেকে কুমিল্লা পৌঁছানোর পদক্ষেপভাড়া
বাসসায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং কমলাপুর থেকে উপকূল, তিশা , স্টার লাইন, বিআরটিসি, রয়েল, এশিয়া লাইন পরিবহন২২০-৩৫০ টাকা
ট্রেনচট্টগ্রামগামী সুবর্ণা ও সোনার বাংলা ছাড়া প্রায় সকল ট্রেন কুমিল্লা রেলওতে স্টেশনে যাত্রা বিরতি দেয়১৭০-৪৬৬ টাকা

আবাসিক হোটেল

  • কুমিল্লা ক্লাব
  • কুমিল্লা সিটি ক্লাব
  • হোটেল চন্দ্রিমা
  • হোটেল শালবন
  • হোটেল আবেদিন
  • হোটেল সোনালী
  • হোটেল নিদ্রাবাগ
  • আশীক রেস্ট হাউস
  • হোটেল নুরজাহান

সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ফিচারের অংশবিশেষ দিয়ে আজকের লেখার ইতি টানব; এখানে স্বল্প কথায় সুন্দর করে চোখ জুড়ানো এই দীঘির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।

পুরো লেখার লিংক ।

“১৪৫৮ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজ ধর্মমাণিক্য বর্তমান কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, বাদুরতলা, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম ও নগর উদ্যানের মধ্যবর্তী স্থানে ২৩ দশমিক ১৮ একর জায়গা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পানির সংকট মেটাতে দিঘি খনন করেন। রাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এর নাম হয় ধর্মসাগর দিঘি। পরে কোনো একসময়ে ধর্মসাগরের উত্তর পাড় ঘেঁষে ১ দশমিক ২৩ একর ভূমির ওপর নির্মাণ করা হয় রানীর কুঠি। এটির পূর্বে স্টেডিয়াম ও কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং উত্তরে নগর উদ্যান ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top